Friday , 23 May 2025
নিউজ টপ লাইন
দুই স্কুলছাত্রী হত্যা : এক বছরেও চার্জশিট দেয়নি পুলিশ

দুই স্কুলছাত্রী হত্যা : এক বছরেও চার্জশিট দেয়নি পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ শেষে হত্যার এক বছরেও চার্জশিট জমা দেয়নি পুলিশ। এমনকি আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে নিহতদের দুই পরিবারকে দফায় দফায় হুমকি দিলেও পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নিহতদের পরিবার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাদারীপুরের মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া ও হ্যাপীকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর ধর্ষণ শেষে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ করে স্কুলছাত্রীদের পরিবার। এ ঘটনায় প্রথমে পুলিশ পরে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।

কিন্তু মামলার এক বছরেও আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়নি। মামলার প্রধান আসামি রানা নাগাসীসহ অন্যরা গ্রেফতার হলে জামিনে বেরিয়ে প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে অসহায় ওই দুই পরিবারকে দফায় দফায় হুমিক দিচ্ছে তারা। এ বিষয়টি একাধিকবার পুলিশকে জানালেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পায়নি নিহতদের পরিবার।

নিহত সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদার বলেন, `আমার মেয়েকে হত্যার এক বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত চার্জশিট দেয়নি পুলিশ। শুরু থেকেই পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডকে গুরুত্ব দেয়নি। এখন সিআইডিতে গেছে, তবে সঠিক বিচার পাবো কিনা জানা নেই।`

এদিকে নিহত হ্যাপীর মা মুক্তা আক্তার বলেন, `আসামিরা জামিনে এসে আমাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। কয়েকদিন আগে প্রধান আসামি রানা নাগাসী রাতে কয়েকজনকে নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। আমি পুলিশকে বিষয়টি বললেও কোনো কাজ হয়নি। এখন আমরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।`

চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের ঘটনায় হতাশ এলাকাবাসী ও নিহতদের আত্মীয়-স্বজনরা। তারা এই নৃংশস হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন, মামলাটিকে ধামাচাপা দিতে এখনো আদালতে জমা দেয়া হচ্ছে না অভিযোগপত্র। তারা বলেন, `আমরা হতাশ। কেন কোন কারণে পুলিশ এমন করছে, বুঝছি না। আমরা এই নৃংশস হত্যার সঠিক বিচার দাবি করি।`

বর্তমানে মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডি কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নিহত হ্যাপী ও সুমাইয়ার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদরুদ্দোজা শুভর উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়।

পরে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখনো ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ফরেনসিক রিপোর্ট আমাদের হাতে আসেনি। যে কারণে তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে।’

জেলা প্রশাসক কামাল উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, `এখন পর্যন্ত আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। যদি নিহতদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থাকে, আমি সঠিক বিচারের জন্যে পিপির মাধ্যমে চেষ্টা করবো।`

উল্লেখ্য, এ ঘটনায় সদর থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা ও  মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যাল আদালতে ধর্ষণ শেষে বিষ খাইয়ে হত্যা মামলা করা হয়। এরপর প্রধান আসামি রানাসহ ৪ জন গ্রেফতার হলেও তারা জামিনে বেরিয়ে আসে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

May 2025
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
Scroll To Top