Friday , 23 May 2025
নিউজ টপ লাইন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি যাচ্ছেন ৩ ডিসেম্বর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি যাচ্ছেন ৩ ডিসেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩ ডিসেম্বর দ্বিপক্ষীয় সফরে দিল্লি যাচ্ছেন। এই সফরের ভিত্তি রচনায় যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে যোগ দিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঢাকা আসতে পারেন। একইসাথে দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠকও অনুষ্ঠিত হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সামনে রেখে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সাথে বৈঠক করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে এই চুক্তিটি দীর্ঘদিন ঝুলে রয়েছে। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকালেই তিস্তার অন্তবর্তীকালীন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে শেষ মুহূর্তে এই চুক্তি সইয়ে অপারগতা প্রকাশ করে ভারত। এর প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারে সম্মতিপত্র সইয়ে বাংলাদেশ বিরত থাকে।

অবশ্য গত বছর জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশ চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারে দিল্লির সাথে সমঝোতা স্মারক সই করে। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে উপকূলীয় জাহাজ চলাচলসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চুক্তি ও সিদ্ধান্ত হয়। নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর এ যাবতকালের সবচেয়ে সফল সফর হিসাবে বিবেচনা করে দিল্লি।

এর প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরকেও সফল করতে চায় বাংলাদেশ। এই সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ছাড়াও অন্যান্য ইস্যুর মধ্যে ভারতের সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরো জোরদার করা এবং বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) এবং বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা গুরুত্ব পাবে।

তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে মমতা ব্যানার্জি দুইবার ঢাকা সফর করেছেন। প্রথমবার ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন এবং দ্বিতীয়বার নরেন্দ্র মোদির সফরসঙ্গি হিসেবে। দুইবারই মমতা তিস্তা চুক্তি সইয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করলেও সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেননি।
মমতা পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তিস্তার মত স্পর্শকাতর কোনো চুক্তি সইয়ে আগ্রহ দেখাননি। সর্বশেষ নির্বাচনে তার দল তৃণমূল কংগ্রেস দ্বিতীয়বারের মত পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসায় এখন অন্তত অভ্যন্তরীণ রাজনীতি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের অনিষ্পন্ন ইস্যু তিস্তা চুক্তি সইয়ের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়াবে না বলে ভারতীয় সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীরা আশা প্রকাশ করেছেন।

মোদির ঢাকা সফরের পর ভারতের সাথে স্থল সীমানা চুক্তি বাস্তবায়ন হয়েছে। বিনিময় হয়েছে ছিটমহল, সমাধান হয়েছে অপদখলীয় ভূমি হস্তান্তর। দুই দেশের অনিষ্পন্ন সীমানাও নিষ্পন্ন হওয়ার পথে রয়েছে। ভারত বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ত্রিপুরায় পণ্য পাঠিয়েছে, যদিও ট্রানজিট মাশুল সরকার নির্ধারিত কোর কমিটির সুপারিশ থেকে অনেক কম।

নরেন্দ্র মোদি ২০১৫ সালে ৬ জুন দুইদিনের সফরে ঢাকা এসেছিলেন। সফর শেষে দেয়া যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছিল তার ভিত্তিতে দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি সম্পাদনের জন্য মোদিকে অনুরোধ জানান। মোদি জানান, সব পক্ষকে অন্তর্ভূক্ত করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিস্তা ও ফেনী নদীর অন্তবর্তীকালীন চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া চলছে। বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে যৌথভাবে গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণে ভারতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা। নয়াদিগন্ত।

মোদি জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে ভারতের সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোর সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। বাংলাদেশে প্রভাব পড়ে এমন কোনো আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না বলে ভারতের প্রতিশ্রুতি পুন:র্ব্যক্ত করেছেন মোদি। তিনি বলেন, বর্তমান কাঠামোয় টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই বাঁধের নেতিবাচক কোনো প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে এমন সিদ্ধান্ত ভারত এককভাবে নেবে না। সংস্কারের মাধ্যমে সম্প্রসারিত জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্য পদকে সমর্থন দেয়া হবে বলে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

May 2025
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
Scroll To Top