শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সম্মেলন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, স্বাচিপের যারা সদস্য রয়েছেন, তারা জনকল্যাণে কাজ করবেন। সাধারণ মানুষকে সেবা দেবেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষ- হতদরিদ্র মানুষ যেন দেশে চিকিৎসা বঞ্চিত না হন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজে কি পেলাম কি পেলাম না সেটা চিন্তা না করে দেশের মানুষের কি দিতে পারলাম সে চিন্তা করবেন। মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবেন। ভালভাবে তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। ব্যবহার দিয়ে তাদের আস্থায় নিয়ে আসতে হবে। তারা যেন চিকিৎসা বঞ্চিত না হয়। আপনারা মহৎ পেশায় নিয়োজিত। মানুষের কল্যাণ ও সেবার দিকে নজর রেখে আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন এটাই আশা করি।
প্রধানমন্ত্রী মানুষ হত্যা বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এক বছর তিন মাস ধরে তারা একই তাণ্ডব চালায়। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে। এখন শুরু হয়েছে গুপ্ত হত্যা। যখন তারা দেখলো দেশের মানুষ খুন করে সরকার উৎখাত করা যায় না তখন তারা বিদেশি মানুষের উপর হামলা করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাচ্ছে। সেটা কখন করা হচ্ছে, যখন দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধ চায়নি তারাই এই হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের সময় দেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন তুলে ধরে বলেন, আমরা স্বাস্থ্য সেবা দেশের মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। আমরা ১৩ হাজার ৮শ’ কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি। প্রথমবার ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক করি। বিএনপি এসে তা বন্ধ করে দেয়। বন্ধ করে দেয়ার পেছনে কারণ দেখিয়েছিলো এই কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পেলে, ফ্রি ওষুধ পেলে সবাই নৌকায় ভোট দেবে। মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে না। তাই তারা ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। আমরা ভোটের জন্য কাজ করি না। মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করি। আমরা আইন করে দেব যেন সরকারে যেই থাক এগুলো কেউ বন্ধ করতে না পারে।
প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আরও বলেন, আমরা প্রতিটি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি, চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি করেছি, হাসপাতাল বৃদ্ধি করেছি। মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করেছি। ৩৪৫টি নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছি। চিকিৎসক, নার্সের সংখ্যা বাড়িয়েছি। নার্সদের বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১২ হাজার ৪শ’ আসন বৃদ্ধি করেছি। ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। আরও দুইটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। বিশ্বের বুকে আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াবো। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্য আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
শেষে তিনি স্বাচিপের সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার কামনা করেন।
স্বাচিপের এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. অধ্যাপক আ ফ ম রুহুল হক।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ভুইয়া ডাবলু, স্বাচিপের মহাসচিব ডা. ইকবাল আর্সলান, ডা. শফিকুর রহমান, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।