সন্ত্রাসীর হাতে ধর্ষনের শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা ॥
ক্ষোভে ফুঁসছে রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তিবাসী ॥ ধর্ষক সন্ত্রাসীর বিচার দাবী
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকায় চিহ্নিত এক সন্ত্রাসীর ধর্ষনের শিকার হয়ে লজ্জা ও ক্ষোভে রুবিনা আক্তার (১৫) নামে এক এস এস সি পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রবাসী। রুবিনা আক্তার ওই এলাকার হারুন মিয়ার মেয়ে ও নবকিশলয় উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড গার্লস কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
নিহতের পারিবারিক সুত্র ও স্থানীয়রা জানায়, কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকার হারুন মিয়ার মেয়ে ও নবকিশলয় উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড গার্লস কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী রুবিনা আক্তারের সাথে একই স্কুলে পড়–য়া এক ছাত্রের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের জের ধরে গত ১৭ জানুয়ারী দুপুরে রুবিনা আক্তার একই স্কুলে পড়–য়া তার প্রেমিককে নিয়ে বিয়ের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করে। খবর পেয়ে ওই দিন গভীর রাতে রুবিনা আক্তারের প্রেমিক ঐ ছাত্রের পিতা-মাতা রুবিনা আক্তারকে ধরে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল খালেকের পুত্র চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, পুলিশ হত্যাসহ অর্ধশতাধিক মামলার আসামী মোস্তফা ওরফে ডাকাত মোস্তফা তাদেরকে আটক করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এক পর্যায়ে রুবিনা আক্তারের প্রেমিক ঐ ছাত্র ও তার পিতা-মাতাকে ভয় দেখিয়ে কথা বলার নাম করে রুবিনা আক্তারকে পার্শ্ববর্তী একটি ঘরে নিয়ে যায় এবং রুবিনা আক্তারকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এ সময় ভয়ে রুবিনা আক্তারের প্রেমিক ঐ ছাত্র ও তার পিতা-মাতা পালিয়ে যায়। পরে ভোরে রুবিনা আক্তারকে তার পিতামাতার কাছে পৌছে দেয় মোস্তফা ওরফে ডাকাত মোস্তফা। গত ১৮ জানুয়ারী সকালে এ বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে লজ্জা ও ক্ষোভে ঐদিন দুপুরে রুবিনা আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় ক্ষোভে বিক্ষুব্দ হয়ে ওঠেছে চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রবাসী। তারা অবিলম্বে চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকার চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, পুলিশ হত্যাসহ অর্ধশতাধিক মামলার আসামী মোস্তফা ওরফে ডাকাত মোস্তফাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
এদিকে, নিহতের পারিবারিক সুত্র ও স্থানীয়রা আরো জানায়, ধর্ষক মোস্তফা ওরফে ডাকাত মোস্তফা একজন ভয়ংকর সন্ত্রাসী হওয়ায় ভয়ে তার বিরুদ্ধে এ ঘটনায় মামলা করার সাহস পাচ্ছে না রুবিনার পরিবার। এছাড়া স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ধর্ষক মোস্তফা ওরফে ডাকাত মোস্তফার পক্ষ নিয়ে ধর্ষনের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্ষক মোস্তফা ওরফে ডাকাত মোস্তফাসহ ঐ প্রভাবশালী মহলটি রুবিনার দরিদ্র অসহায় পিতা-মাতাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষনের বিষয়ে মামলা করলে অথবা বাড়াবাড়ি করলে হত্যা করার হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি, রুবিনা আক্তার মোবাইলের জন্য পিতামাতার সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে-পুলিশের কাছে এমন মিথ্যা কথা বলতে বাধ্য করেছে।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক জানান, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা রুবিনা আক্তারের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তে ধর্ষনের আলামত পেলে অবশ্যই ঐ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
রূপগঞ্জে দুই দিন ব্যপী ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার মৈকুলী এলাকায় দুই দিন ব্যপী ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। খাদুন, রূপসী, কাহিনা, মৈকুলী, খিদিরপুর কবরস্থান ও হাজী মনির উদ্দিন বেপারী ক্বওমী মাদ্রাসার উদ্যেগে এ ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। গত শুক্রবার প্রথম দিনের ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতিক)। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হযরত মাওলানা মুফতি আব্দুল কাইয়ুম জিহাদী, হযরত হাফেজ মাওলানা আব্দুল মতিন মিয়াজী, হযরত মাওলানা জসিম উদ্দিন রহমানী প্রমুখ। শনিবার দ্বিতীয় দিনের ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি ও অত্র মাদ্রাসা মসজিদ ও কবরস্থানের সভাপতি অ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার। এতে বক্তা হিসেবে ছিলেন, ড. আল্লামা মুফতি শহীদুল্লাহ ইব্রাহীমী উজানভী, হাফেজ মাওলানা মুফতি জাকিরুল্লাহ শরীয়তপুরী, হাফেজ মাওলানা এমদাদুল হক সুলতানী প্রমুখ।
সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতিক) বলেন, উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা মসজিদ ও কবরস্থানের উন্নয়ন করা হয়েছে। উন্নয়নের বাকি কাজ গুলো সমাপ্তির পথে। আর এসব ধর্মীয় কাজে এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মাহফিলে অ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, হাজী মনির উদ্দিন বেপারী ক্বওমী মাদ্রাসাকে কোরআনিক রিসার্চ সেন্টার ও গবেশনাগারে পরিণত করা হবে। শিক্ষার্থীদেরকে সমাজ ও দেশ গড়ার জন্য যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে। মনির উদ্দিন বেপারীর নিজস্ব জমির উপরই এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া একটি হাসপাতালও স্থাপন করা হবে।
রূপগঞ্জে সৎ ভাইয়ের নেতৃত্বে বসতবাড়ি হামলা ভাংচুর লুটপাট
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ রূপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ সৎ ভাইয়ের নেতৃত্বে তার লোকজন অপর ভাইয়ের বসতবাড়িতে হামলা ভাংচুর লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার সকালে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের ১নং ওয়ার্ডে ঘটে এ ঘটনা।
ক্ষতিগ্রস্থ্য জিল্লুর রহমান জানান, জমি-জমা বিষয়াদি নিয়ে জিল্লুর রহমানের সঙ্গে তার সৎ ভাই শহিদুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিলো। ওই বিরোধের জের ধরে সকালে সৎ ভাই শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে তার লোকজন ধারালো অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জিল্লুর রহমানের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যপক ভাংচুর করে। এসময় ঘরে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল সেট লুটে নেয়। হামলার ঘটনার সময় জিল্লুর রহমানসহ পরিবারের লোকজন বাড়িতে ছিলো না। জিল্লুর রহমানকে বাড়িতে না পেয়ে মোবাইল ফোনে তাকে হত্যার হুমকি দেয় সৎ ভাইসহ তার লোকজন। এ ঘটনার পর থেকে সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকায় যেতে পারছেননা জিল্লুর রহমান। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রূপগঞ্জে ৪ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ রূপগঞ্জে পৃথকস্থানে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন প্রকার মাদকসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার সকালে উপজেলার তারাব হাটিপাড়া, চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র ও ভুলতা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, তারাব হাটিপাড়া এলাকার আশরাফ উদ্দিনের স্ত্রী আমেনা বেগম, আফজাল হোসেনের ছেলে তানভির হোসেন, চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রের মহি উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আক্তার ও রাজধানীর জুরাইন এলাকার শেখ ই¯্রাফিল হোসেনের ছেলে মাসুদ হোসেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন প্রকার মাদক বিক্রি করে আসছে বলে পুলিশের কাছে সংবাদ ছিলো। রোববার সকালে তারাব হাটিপাড়া এলাকা থেকে ১৭ বোতল ফেনসিডিলসহ আমেনা বেগম ও তানভির হোসেনকে, ১৫ পিছ ইয়াবাসহ হাসিনা আক্তারকে ও ৭ বোতল বিদেশী মদসহ মাসুদ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ব্যপারে রূপগঞ্জ থানায় পৃথক ৩টি মামলা হয়েছে। আসামীদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।