Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন

সৌরজগতের বৃহত্তম বিস্ফোরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

স্নায়ুযুদ্ধ তখন চরমে, ঠিক সেই সময় মার্কিন স্পাই স্যাটেলাইট সৌরজগতের বেশ কিছু ছবি তোলে। সেই ছবি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা আমূল পাল্টে ফেললেন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি। এতে সৌরজগৎ সম্পর্কে তাদের ধারণা আমূল পাল্টে গেল।

কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পরের বছর ১৯৬৩ সালে, আমাদের এই পৃথিবী জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছিল আরেকটি বিশ্বযুদ্ধে এবং অবশ্যই সাধারণ কোনো যুদ্ধ নয়, রীতিমতো পারমাণবিক বিশ্বযুদ্ধে। সে সময় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর নজর রাখার জন্য মহাকাশে কয়েকটি স্যাটেলাইট পাঠায় আমেরিকা।

সেই সময়ই একটি চুক্তিতে উপনীত হয় দেশ দুটি। চুক্তি অনুযায়ী, আবহাওয়ামণ্ডলী ও মহাকাশে সব ধরনের পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়। এই সব স্যাটেলাইট এমনভাবে নির্মাণ করা হয়, যা উচ্চ তেজস্ক্রিয় কিংবা গামা রশ্মি চিহ্নিত করতে সক্ষম। পারমাণবিক বিস্ফোরণ থেকে এই গামা রশ্মির বিচ্ছুরণ ঘটে থাকে।

কিন্তু বেশ কিছু রহস্যময় তেজস্ক্রিয় বিস্ফোরণের ঘটনা স্যাটেলাইটগুলো চিহ্নিত করে ১৯৬৭ সালে। কিন্তু এই বিস্ফোরণগুলোর চরিত্র বিশ্লেষণ করে বোঝা যায় যে, পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণের ফলে এই রশ্মির সৃষ্টি হয়নি। এগুলো এসেছে দূরের কোনো মহাকাশ থেকে কিংবা অন্য কোনো সৌরজগৎ থেকে।

সৌরজাগতিক এই সব কৌতূলোদ্দীপক ঘটনাগুলো গোপন রাখা হয় ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত। কেউ জানত না ওই বিস্ফোরণগুলো কিসের। দশকের পর দশক ধরে ওই গামা রশ্মি বিস্মিত করে রেখেছে বিজ্ঞানীদের।

স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর নানা ধরনের মহাকাশ যান পাঠানো হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের টেলিস্কোপও ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে এই বিস্ফোরণগুলো সম্পর্কে আরো ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

এই গামা রশ্মি এসেছে সৌরজগতের সবচেয়ে চমকপ্রদ বস্তু থেকে; যেমন ব্ল্যাক হোল এবং নিউট্রন স্টার। তারা এতই উজ্জ্বল যে, তার উজ্জ্বলতা ধরে রাখে মহাকাশের বিশাল একটি এলাকাজুড়ে। এতে প্রথম তারার উৎপত্তি জানার একটি আলামত পাওয়া যায়।

এ ছাড়া গামা রশ্মির বিস্ফোরণ থেকে জানা যায়, আগে যেমনটা ধারণা করা হতো আমাদের এই সৌরজগৎ তার চেয়ে বেশি গতিশীল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন যে, আমাদের এই মহাবিশ্ব একটি বিস্ফোরক এবং নিয়ত পরিবর্তনশীল স্থান।

গামা রশ্মি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোফিজিস্ট এন্ড্রু ম্যাকফাডিন বলছেন, সৌরজগতের সবচেয়ে শক্তিশালী বা বৃহত্তম বিস্ফোরণের ফলে গামা রশ্মির সৃষ্টি এবং এগুলোই মহাবিশ্বের সবচেয়ে উজ্জ্বলতম রশ্মি।

এখন এই বিষয়টি পরিষ্কার যে, গামা রের বিস্ফোরণ বা বিচ্ছুরণ যে নতুন ধরনের জ্যোতির্বিদ্যার আবির্ভাব ঘটাতে যাচ্ছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

July 2016
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
Scroll To Top