আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে গরুর গোশত বহন করার অভিযোগে দুই মুসলিম নারীকে প্রকাশ্যে ব্যাপক মারধর করেছে এক হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা। মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের মান্দসৌর রেল স্টেশনে ওই দুই মহিলাকে মারধর করে তারা।
ওই মহিলাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পাচারের উদ্দেশ্যে সঙ্গে করে গরুর গোশত নিয়ে যাচ্ছিলেন। যদিও প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, ওই মহিলাদের কাছে মহিষের গোশত ছিল।
অভিযুক্ত ওই মহিলাদের পুলিশ গ্রেফতার করলেও যারা তাদের প্রকাশ্যে মারধর, কিল, ঘুষি, চড় ও লাথি দিয়েছে এবং গালিগালাজ ও নিগ্রহ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওচিত্রে প্রকাশ, ওই মুসলিম নারীদের পুলিশের সামনেই মারধর করছে হিন্দুত্ববাদী মহিলাদের একটি গ্রুপ। প্রাণের ভয়ে ওই মহিলারা চিৎকার করলেও তাদের মাটিতে ফেলে বেদম প্রহার করা হয়। তাদের রক্ষা করতে পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকায় মার খাওয়ার পাশাপাশি নিগ্রহের শিকার হতে হয় মুসলিম নারীদের।
গণমাধ্যমে প্রকাশ, এ সময় গো-ভক্ত ওই হিন্দুত্ববাদী আক্রমণকারীরা ‘গো-মাতা কী জয়’ স্লোগান দেয়। পুলিশ তাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে ৩০ কেজি গোশত উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তারা ওই গোশত বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ বলছে- তাদের কাছে গোশত বিক্রি করার কোনো বৈধ পারমিট ছিল না। স্থানীয় ডাক্তাররা উদ্ধার হওয়া ওই গোশত পরীক্ষা করে তা মহিষের গোশত বলে জানিয়েছে।
এরপর পুলিশ মহিষের গোশত পাচার করার অভিযোগে তাদের স্থানীয় আদালতে পেশ করলে তাদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়। যদিও ওই মুসলিম নারীদের যেসব উন্মত্ত হিন্দুত্ববাদী মহিলা এবং জনতা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মারধর, দুর্ব্যবহার, নিগ্রহ ইত্যাদি করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনোই পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিং অবশ্য অভয় দিয়ে বলেছেন, ‘আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। ওই ঘটনার তদন্ত করা হবে।’