বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় জেএমবির শক্তি উদ্বেগজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশের ঢাকার কল্যাণপুরে কথিত জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযান নিহত নয়জন এবং গুলশানের ঘটনায় জড়িতরা একই গোষ্ঠীর বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
এর আগে গুলশানের ঘটনার জন্য পুলিশ নিষিদ্ধ গোষ্ঠী জামায়াতুল মুজাহিদিন বা জেএমবির কথা উল্লেখ করেছিল।
প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাখাওয়াত হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ঢাকায় এত নিরাপত্তার মধ্যেও এতগুলো লোক একসাথে ছিল বেশ কিছুদিন। এবং গুলশান হামলার পর প্রায় একমাসের মত চলছে। তাতে মনে হয়, যে জেএমবিকে আমরা ২০০৫ সাল থেকে ২০১০ বা ২০১১ সাল পর্যন্ত জানতাম তাদের নতুন করে পুনরুত্থান হয়েছে। নতুন রূপে জেএমবি সামনে আসছে এবং এদের বিস্তৃতি অনেক বেশি”।
বিষয়টি অবশ্যই উদ্বেগের এবং আশঙ্কার বলে মনে করেন সাখাওয়াত হোসেন ।
তার ভাষায়, “ঢাকা শহরে যদি এই অবস্থা হয়ে থাকে তাহলে নিশ্চিতভাবেই সমগ্র বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তারা ছড়িয়ে পড়েছে। এটা অবশ্যই একটা উদ্বেগের বিষয়, আশঙ্কার বিষয়”।
এই পুনরুত্থান কতটা বিস্ময়কর জানতে চাইলে মিস্টার হোসেন বলেন, এগুলো গত দুইবছর ধরে ঘটনাগুলো একটার পর একটা যেভাবে ঘটেছিল তাতে একধরনের সংকেত বা উপসর্গ লক্ষ্য করা যাচ্ছিল।
পুলিশ এর আগে এসব ঘটনায় জড়িত বলে যাদের চিহ্নিত করেছিল তাতে এরা শক্তিশালী হচ্ছে এবং বড় ধরনের কিছু করবে বলে একধরনের বিশ্লেষণ ছিল।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এসব হামলা সম্পর্কে আগে কতটা আঁচ করতে পেরেছে?
এ প্রসঙ্গে মিস্টার হোসেন বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন গুলশান হামলার আগে গোয়েন্দা বাহিনীর পক্ষ থেকে কূটনৈতিক এলাকার হামলা হতে পারে বলে এমন জানানো হয়েছিল।
তবে দিন, ক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা যায়নি বলে ততটা গুরুত্ব দেয় হয়নি বলেও তিনি বলেছেন।
গোয়েন্দারা সার্বিক একটা ধারনা দিলেও একেবারে নির্দিষ্ট করে পৃথিবীতে কোন গোয়েন্দা বাহিনীই বোধহয় বলতে পারেনা।
কিন্তু গোয়েন্দা তথ্য ছাড়া এধরনের সন্ত্রাসী সংগঠন দমন করা খুব সহজ নয়।
সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কতটা দক্ষতা দেখাতে পারছে?
নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কিছুটা তো সামর্থ্যে ঘাটতি রয়েছে।সমগ্র দেশে এবং বিশ্বে যে অবস্থা হচ্ছে সেই ঘাটতি পূরণ হতে পারে একটি পারস্পরিক সহযোগিতা এবং তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে।
কারণ এটা শুধু বাংলাদেশ বা কোনও দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে সীমাবদ্ধ নেই। মতাদর্শ-গত হোক বা যোকোনভাবেই হোক বাংলাদেশের ভেতরের লোকগুলোর সাথে বাইরের একটা স্পষ্ট যোগাযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সূত্র: বিবিসি