নিজস্ব প্রতিবেদক: নাম তার চ্যাং গুওরোং। রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করাটাই তার কাজ। কোন দিন জুটলে খায়, না হলে পেটে খিদে নিয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। তবে ভিখারি হলে হবে কী, চ্যাং কিন্তু জীবনটা কাটায় তার নিজস্ব স্টাইলে। ছেঁড়া জ্যাকেট, জুতা রাস্তা থেকে তুলে এনে নিজের স্টাইলে সেলাই করে পরে। আসলে চ্যাংয়ের জীবনমন্ত্রটা খুব সোজা। তুমি যতই ভিখারি হও, মনটা রাখো রাজার মত। শেষ পর্যন্ত এই জীবনমন্ত্রটাই বদলে দিল চ্যাংয়ের জীবন।
আর পাঁচটা দিনের মতই দক্ষিণ চিনের নিংবোর বড় রাস্তায় চ্যাং ভিক্ষা করতে বেরিয়েছিল। পরনে জ্যাকেট, ভিতরে সোয়েটার, ফ্যাব্রিক বেল্ট আর মুখে সিগারেট। চ্যাংকে চোখে পড়ে যায় এক তরুণের।
সে চমকে যায়, আরে এটা একজন ভিখারি! সঙ্গে সঙ্গে সে তার কাঁপা কাঁপা অপেশাদার হাতে তুলে নেন চ্যাংয়ের ছবি। সেই ছবি তারপর পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ব্যস, ছবিটা ভাইরাল হতে সময় নেয়নি। চিনের বিজ্ঞাপন কোম্পানিগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ে চ্যাংকে পেতে। কিছুটা মেকওভারের পর চ্যাং নেমে পড়েন মডেলিং। তারপরটা সবারই জানা। দেশের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম পুরুষের শিরোপা পান তিনি।
চ্যাংয়ের জীবনের এই রূপকথার মত উত্থানের বাইরেও একটা গল্প আছে। ১৯৯৬ সালে চ্যাং নিংবোতে এসেছিলেন কাজের খোঁজে। আসলে চ্যাংয়ের একটা সুন্দর পরিবার আছে। বাবা, স্ত্রী, দুই সন্তান নিয়ে ভরা পরিবার। ভাল চাকরিও ছিল একটা। কিন্তু চাকরিটা চলে যাওয়ার পরই সব এলোমেলো হয়ে যায়। চাকরি যাওয়ার পরও বাড়িতে কিছু জানাননি তিনি। সংসার চালাতো জমানো টাকা দিয়ে। সেটাও একদিন শেষ হওয়ার পর তিনি বাড়ি ছেড়ে পালান। তারপরই নিংবোতে। সেখানে কিছু না পেয়ে একেবারে ভিক্ষা করতে শুরু করেন।
১৪ বছর পর বাড়ি ফিরে চ্যাং দেখে তার বাবা আর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। চ্যাংয়ের ভক্তকূল প্রথমে তাকে জীবনে ফিরে আসতে মোটা টাকার সহায়তা করে। পরে অবশ্য চ্যাং মোটা টাকার চুক্তিতে কাজ করার পর বেশ বড়লোক হয়ে যায়। সত্যি সিনেমা অনেক সময়ই জীবনের ঢঙে চলে। জীবনটাও কারও কারও সিনেমার ঢঙে চলে।