আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের দুটি গ্রামে মন্দিরে প্রবেশ করার অনুমতি না মেলায় ক্ষুব্ধ ২৫০ টি দলিত পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) গণমাধ্যমে প্রকাশ, পজহনঙ্গকল্লিমেড্ডু এবং নাগপল্লি গ্রামের ওই দলিত পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নাগাপট্টিনম জেলার পজহনঙ্গকল্লিমেড্ডু গ্রামের ১৮০ টি দলিত পরিবার প্রত্যেক বছর মন্দিরে পাঁচ দিনব্যাপী পুজো অনুষ্ঠানের মধ্যে একদিন তারা পুজো করতে চায়। যদিও স্থানীয় হিন্দুরা তাদের সেই অনুমতি দেয় না বলে অভিযোগ। গ্রামটির ৬ জন দলিত হিন্দু অবশ্য আগেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।
‘তামিলনাড়ু তৌহিদ জামাত’-র পক্ষ থেকে ওই গ্রামে পবিত্র কুরআনের কপি বিতরণ করা হয়েছে। খ্রিস্টান মিশনারিরাও ওই গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। কিছু হিন্দু সংগঠন অবশ্য দলিতদের ধর্ম পরিবর্তন না করার জন্য আবেদন জানিয়েছে।
পজহনঙ্গকল্লিমেড্ডুতে প্রায় ৪০০ পরিবারের বাস। এর মধ্যে ১৮০ টি পরিবার দলিত। এদের মধ্যে বেশিরভাগই হিন্দু পিল্লাই সম্প্রদায়ের।
দলিত পার্টির এক নেতা বলেন, ‘যখন পুলিশ এবং প্রশাসন তাদের ভদ্র কালীআম্মান মন্দিরে পুজো করার অধিকার দিতে ব্যর্থ হয়, তখন গ্রামের যুবকরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পরামর্শ দেয়। জেলা কর্মকর্তার কাছে এ নিয়ে কয়েকবার আবেদন জানানো হলেও সেখান থেকে কোনো জবাব আসেনি।’
তামিলনাড়ু তৌহিদ জামাতের বি আব্দুল রহমান বলেন, ‘কিছু গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে ফোন আসার পর তাদের স্বেচ্ছাসেবীরা সেখানে গিয়েছিলেন। তারা ধর্ম পরিবর্তন করতে চেয়েছিল, কিন্তু এটা এত সহজে হওয়ার নয়, কারণ ইসলাম হল ‘জীবন বিধান’। এটা রাগের মাথায় গ্রহণ করার বিষয় নয়। আমরা ওদের বলেছি আগে ধর্ম সম্পর্কে ভালো করে পড়াশোনা করুন তারপর আমাদের আছে আসুন। তাদের অনুরোধে আমরা তাদের মধ্যে কুরআনের কপি বিতরণ করেছি। এদের মধ্যে যে ৬ জন ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ভালোভাবে উপলব্ধি করে আমাদের জানিয়েছে, তারা চার দিন আগে ইসলাম গ্রহণ করেছে।’
অন্যদিকে, নাগপল্লি গ্রামের ৭০ টি দলিত পরিবারও মনে করছেন, বৈষম্য দূর করার ‘একমাত্র উপায়’ ধর্ম পরিবর্তন। গ্রামের মন্দির ট্রাস্টের সভাপতি পি বেট্রিবেল বলছেন, ‘গ্রামে বেশ কয়েকটি মন্দির ছিল কিন্তু আমাদের (দলিতদের) একটি মন্দির আলাদাভাবে তৈরি করতে হয়। কিন্তু গত দুই বছর শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরা হিন্দু পরিবার আমাদের মন্দিরে যাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং তাকে কব্জা করার চেষ্টা করছে। পুলিশ অথবা সরকার কেউই আমাদের সাহায়্য করছে না।’
কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেত্রী সাধ্বী প্রাচিরা যখন ভারতকে মুসলিম মুক্ত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, তখন দলিত হিন্দুদের একটি গ্রুপের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।