Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বড় জয় লঙ্কানদের

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বড় জয় লঙ্কানদের

ক্রীড়া ডেস্ক :

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১১৭ রানে অল আউট হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই লঙ্কানরাই বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলের বিপক্ষে জিতেছে ১০৬ রানের ব্যবধানে। এটি ওশেনিয়া মহাদেশের দলটির বিপক্ষে তাদের দ্বিতীয় জয়।

কুসল মেন্ডিজের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শেষে অস্ট্রেলিয়াকে ২৬৮ রানের টার্গেট দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ৩৮ বছর বয়সী রঙ্গনা হেরাথের সঙ্গে অভিষিক্ত সান্ডাকানের স্পিন ঘূর্ণিতে অতিথি দলটি মাত্র ১৬১ রানে অল আউট হয়েছে।

শনিবার টেস্টের পঞ্চম দিনে অনেক আশা নিয়ে মাঠে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। জয়ের জন্য মাত্র ১৮৫ রান দরকার ছিল। হাতে ছিল ৭ উইকেট। কিন্তু লঙ্কানরা দিনের এক সেশন বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে।

এই জয়ের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কা তাদের ১৯৯৯ সালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনল। অসিদের বিপক্ষে টেস্টে তাদের একমাত্র জয়টি সেই ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে। ক্যান্ডিতে সেই ম্যাচে খেলেছিলেন লঙ্কানদের সব কিংবদন্তী ক্রিকেটাররা। অরভিন্দ ডি সিলভা, অর্জুনা রানাতুঙ্গা, সনাৎ জয়সুরিয়া, মাহেলা জয়াবর্ধনে, মুত্তিয়া মুরালিধরন, চামিন্দা ভাসের মতো তারকারা তখন একাদশে ছিলেন।

এরপর দীর্ঘ সময় চলে গেল। অসিদের বিপক্ষে কোনো জয় পেল না। কিংবদন্তীয় ব্যাটসম্যান সাঙ্গাকারা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট জয়ের আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি। মাহেলা-সাঙ্গা একসঙ্গে অবসরে যাওয়ায় মনে হয়েছিল শ্রীলঙ্কার স্বর্ণযুগ বিদায় নিয়েছে। কিন্তু সব ধারণা পাল্টে দিয়ে এক অবিশ্বাস্য জয় ছিনিয়ে নিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসরা।

এই ম্যাচে লঙ্কানদের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভাব হয়েছেন তরুণ ব্যাটসম্যান মেন্ডিজ। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের ৩৫৩ রানের মধ্যে একাই করেছেন ১৭৬ রান। ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্টে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন। ২১ বছর ১৭৭ দিনে সেঞ্চুরি করেছেন। তাতে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সবচেয়ে কম বয়সে লঙ্কান সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে নাম লেখালেন। তাতে ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতেছেন তিনি।

অভিষিক্ত বাঁ-হাতি স্পিনার লক্ষণ সান্ডাকান এই ম্যাচে তুলে নিয়েছেন সাত উইকেট। দলের জয়ে অবদান রেখে অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখলেন তিনি।

তবে ১৯৯৯ সালের ক্যান্ডিতে টেস্ট জয়ের সঙ্গে একজন ক্রিকেটারের গভীর সম্পর্ক আছে। তিনি রঙ্গনা হেরাথ। সেবার ২১ বছর বয়সে অভিষেকের অপেক্ষায় ড্রেসিংরুমে ছিলেন তিনি। ১৭ বছর পর তার অসাধারণ বোলিংয়েই দ্বিতীয়বার জয় পেল শ্রীলঙ্কা। এই ম্যাচে মোট ৯ উইকেট তুলে নিয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসেই পেয়েছেন পাঁচ উইকেট। সঙ্গে পেয়েছেন ১৬টি মেডেন ওভার। ম্যাচের শেষ উইকেটও পেয়েছেন এই তারকা।

এই ম্যাচ নিয়ে অনেক শঙ্কায় ছিল শ্রীলঙ্কা। পাল্লেকেলের আকাশে মেঘের আনাগোনো বেড়ে গিয়েছিল। যে কোনো সময় বৃষ্টি হতে পারত। ছিল আলো সঙ্কটের ভয়। এই ম্যাচে বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকবার খেলা বন্ধ ছিল। আলোর অভাবে দ্রুতই চতুর্থ দিনের খেলার সমাপ্তি টানা হয়েছিল।

শ্রীলঙ্কাকে আরো চাপ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান পিটার নেভিল ও স্টিভ ও’কীফি। তারা দু’জন কোনো রান নেননি। ইনিংসের শেষ ২৫.৩ ওভারে কোনো রান হয়নি। তাদেরকে সহজে আউটও করতে পারেনি লঙ্কান বোলাররা। ১৭৮ বলের জুটি গড়ে তুলেন তারা। এই জুটি করে মাত্র ৪ রান। ন্যূনতম ১০০ বলের জুটিতে সর্বনিম্ন রান রেটের রেকর্ড গড়েছেন তারা।

অবশেষে অভিষিক্ত ধনঞ্জয় ডি সিলভার বলে উইকেটরক্ষক চান্দিমালের তালুবন্দী হন ১১৫ বলে ৯ রান করা নেভিল। তার কিছুক্ষণ পর ও’কীফি হেরাথের বলে বোল্ড হন। তিনি ৯৮ বলে মাত্র ৪ রান করেন।

দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। হেরাথের বলে এলবিডব্লিউ আউট হওয়ার আগে ১২৫ বলে ৫৫ রান করেছেন। এর মধ্যে চতুর্থ দিনে করেছিলেন ২৬ রান।

এদিন ৯ রান নিয়ে খেলা শুরু করা ভোগেস সাজঘরে ফিরেছেন মোট ১২ রান করে। তবে মিশেল মার্শ ২৫ রান করেছেন। শেষ দিনে আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘরের স্কোরে পৌঁছাতে পারেননি।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

July 2016
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
Scroll To Top