স্পোর্টস ডেস্ক : টেস্ট বোলার হবার সম্ভাব্য সব গুণাবলিই আছে তার। ৬ ফুট লম্বা। চওড়া কাঁধ। সুন্দর রানআপ। ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করার সামর্থ্য। ফাস্ট বোলিংয়ের অপরিহার্য্য গুণাবলি সব অস্ত্রই তার আছে- সুইং, বাউন্সার ও ইয়র্কার- সবই।
তারপরও টেস্ট অভিষেক হয়নি তাসকিন আহমেদের। টেস্ট দলেই জায়গা পাননি কখনো। তবে তাকে টেস্ট খেলানোর কথা ভাবা হচ্ছে বছর খানেক ধরেই; কিন্তু ফিটনেস বাঁধা হয়ে দাড়ানোয় পারেননি।
এখন সমস্যা অন্য জায়গায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় বোলিং অ্যাকশন হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। স্থানীয় বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিতে তা সংশোধনের কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই হয়ত বোলিং অ্যাকশন শুদ্ধকরণ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হবেন তাসকিন।
ভক্ত ও সমর্থকরা উন্মুখ হয়ে আছেন প্রিয় বোলারকে আবার মাঠে দেখতে। ভিতরের খবর, এই তরুণ ফাস্ট বোলার বোলিং অ্যাকশন শুধরে খুব জলদি মাঠে ফিরে আসেন, তা কায়মনোবাক্যে চাইছেন নির্বাচকরাও।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কথা শুনে মনে হলো, তাসকিনকে নিয়ে একটা অন্যরকম চিন্তা মাথায় ঘুরাপাক খাচ্ছে তার। কী চিন্তা? জানতে ইচ্ছে করছে খুব তাই না? তাহলে শুনুন, ইংল্যান্ডের সাথে তাসকিনকে টেস্ট খেলানোর কথা জোরে-সোরে ভাবছেন নির্বাচকরা। আর সে কারণেই তারা চান তাসকিন বোলিং এ্যাকশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ওঠেন।
সোমবার সন্ধ্যায় এমন চিন্তার কথাই প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচক। কোনরকম ভনিতা না করে মিনহ্জাুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘ইংল্যান্ডের সাথে টেস্ট সিরিজে ফাস্ট বোলিং স্কোয়াড নিয়ে চিন্তায় আছি খুব। ওয়ানডেতে একজন দুজন নয়, সাতজন বোলার আছে আমাদের। যারা কম বেশি কাজ চালাতে পারবে; কিন্তু জানেন, টেস্টে সে অর্থে একজন কার্যকর পেসারও নেই হাতে। নতুন বল কোন দুজনকে দিয়ে শেয়ার করবো, তা ভেবেই অস্থির।’
ভাববেন না প্রধান নির্বাচক আবেগতাড়িৎ হয়ে এমন বলেছেন। আসলেই তাই। এ মুহুর্তে টেস্টে নতুন বল ভাগ করে নেয়ার মত বোলারের অভাব সুস্পষ্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে গত বছর জুলাইতে ঘরের মাঠে যে দু’জন পেসার নতুন বল ভাগ করে নিয়েছিলেন তার একজন মোস্তাফিজ; কাঁধের ইনজুরিতে। অপারেশনের টেবিলে যাবার প্রহর গুনছেন। তার মাঠে ফিরতে ফিরতে অন্তত চার-পাঁচ মাস সময় লাগবে।
তার খেলার প্রশ্নই ওঠে না। বাকি আরেকজন ছিলেন মোহাম্মদ শহিদ। ভিতরের খবর, তার সাম্প্রতিক অবস্থা তথা ফর্মে অসন্তুষ্ট নির্বাচকরা। তাই বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। আর সে কারনেই মিনহাজুল-হাবিবুল ও সাজ্জাদের চোখ তাসকিনের দিকে।
শহিদের ওপর এখন তাদের আস্থা নেই, বা কমে গেছে, তার জ্বলন্ত প্রমাণ মিনহাজুল আবেদিনের এ উক্তি, ‘আমার হাতে এখন সে অর্থে ফাস্ট বোলার মোটে একজন; রুবেল। শহীদের নাম না উচ্চারন করে তিনি বলেন, আল আমিন ওয়ানডেতে ঠিক আছে। টেস্ট বোলার হিসেবে এখনো তৈরি না। দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে তাই ভাবছি তাসকিনের কথা। বোলিং অ্যাকশন শুদ্ধ হয়ে গেলে তাকেই আরেক পেসার হিসেবে নেয়ার ইচ্ছে আছে।’
ইংল্যান্ডের সাথে সিরিজকে সামনে রেখে আরও একটা তথ্য দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক। জানিয়েছেন, তাসকিন বোলিং অ্যাকশন শুদ্ধ করে উঠতে না পারলে কোন সম্ভাবনাময় তরুণকে সুযোগ দেয়ার কথা ভাবছেন তারা।
তিনি কে? সে পেসারের নাম জানাননি প্রধান নির্বাচক। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আরেক তরুন পেসার আবু জাহিদ রাহির দিকে চোখ রয়েছে নির্বাচকদের। তাসকিন মাঠে ফিরতে না পারলে তার ভাগ্য খুলে যেতে পারে।
এদিকে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে যে বিসিএল শুরু হচ্ছে, সেখানে জাতীয় দলের সম্ভাব্য সব ক্রিকেটারের অংশগ্রহণ বাধ্যতামুলক করা হচ্ছে। প্রধান নির্বাচক জানিয়েছেন, ‘আমরা চাচ্ছি সবাই ম্যাচ খেলুক। সবার ম্যাচ ফিটনেস ও পারফরমেন্স খুঁটিয়ে দেখার সুযোগ হবে।’
জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা কয় ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন? মিনহাজুলের জবাব, ‘যেহেতু আগে ওয়ানডে সিরিজ। তাই যারা ওয়ানডে দলে সুযোগ পাবে, তারা এক ম্যাচই খেলতে পারবে। আর যারা টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত হবে, তারা এক ম্যাচ বেশি খেলার সুযোগ পাবে।’