আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রি জম্মু-কাশ্মিরে টানা ৩৪ দিন ধরে কারফিউ, বনধ এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞার জেরে জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গত ৮ জুলাই সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হিজবুল মুজাহিদীন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর ৯ জুলাই থেকে কারফিউ এবং ১৪৪ ধারার মত নিষেধাজ্ঞা চলছে। এছাড়া মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার প্রতিবাদ জানাতে কাশ্মিরি নেতারা সেই থেকে একটানা বনধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) হুররিয়াত কনফারেন্স প্রধান সাইয়্যেদ আলী শাহ গিলানি, মীরওয়াইজ ওমর ফারুক এবং অন্যরা শ্রীনগরের ঈদগাহে অবস্থিত ‘মাজার এ শোহাদা’য় যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং আটক করে নিয়ে যায়। তারা নিহত হুররিয়াত নেতা শেখ আব্দুল আজিজসহ অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ‘ঈদগাহ চলো’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য আগেভাগেই ঈদগাহে যাওয়ার সমস্ত সড়ক ‘সিল’ করে দেয়া হয়। শেখ আব্দুল আজিজ ২০০৮ সালের ১১ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন।
আজ হুররিয়াত কনফারেন্সের মিডিয়া উপদেষ্টা আইনজীবী শাহিদ উল ইসলাম বলেন, ‘মীরওয়াইজ সাহেব শান্তিপূর্ণভাবে তার বাসা থেকে একটি র্যালির জন্য বেরোলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেছে।’
পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলওয়ামা, কুলগাম, সোপিয়ান তথা অনন্তনাগ আজ বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। এছাড়া শ্রীনগর শহর, সোপোর, বারামুল্লা, হান্দওয়াড়া, ত্রেহগাম, কুপওয়াড়া, বাডগাম তথা গান্দেরবলের ৮ পুলিশ থানা এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে।’
পুলিশ বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, গণপরিবহন ব্যবস্থা, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গত ৯ জুলাই থেকে বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, গতকাল বুধবার বেসামরিক নিরপরাধ মানুষদের উপর গুলিচালনার প্রতিবাদে রাজ্য সরকার পরিচালিত মেডিকেল ও ডেন্টাল হাসপাতালের মেডিকেল ফ্যাকালটি অ্যাসোসিয়েশনের (এমএফএ) সদস্যরা ধর্না-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। সাদা অ্যাপ্রন পরা বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে আইন করে ‘পেলেট গান’ বা ছররা বন্দুক ব্যবহার বন্ধ করার দাবি জানান। পেলেট গানের আঘাতে যাদের চোখ নষ্ট হয়েছে, তাদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করতে হাসপাতালের লনে অবস্থানকারীরা একটা চোখ বেঁধে প্রতিবাদ জানান।
‘নিরীহ মানুষের হত্যার বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি’ বলে এমএফএ’র পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তারা হাসপাতাল চত্বরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোর বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়েছে।