Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
যে সোনাজয়ীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল ৫ শতাংশ!

যে সোনাজয়ীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল ৫ শতাংশ!

স্পোর্টস ডেস্ক : ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে পল মিয়ার্সকে যদি কেউ বলতেন, আপনার ছেলে ক্রিস একদিন অলিম্পিকে অংশ নেবে। অবিশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে থাকতেন ভদ্রলোক। ১৫ বছরের কিশোর ছেলেটি তিন দিন ধরে কোমায়, বেঁচে ফিরবে কি না, সে নিশ্চয়তা দিতে রাজি নন চিকিৎসকেরা—তখন অলিম্পিক সোনা নিয়ে ভাবার মতো সময়ই তো ছিল না। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা সেই ক্রিস রিও অলিম্পিকে সিঙ্ক্রোনাইজড ডাইভিংয়ে সোনা জিতেছেন কাল! ছেলেদের ৩ মিটার স্প্রিং বোর্ডে কাল ফেবারিট চীনকে হারিয়ে দিয়েছে ব্রিটেন। ক্রিস মিয়ার্স ও জ্যাক লাফার হারিয়ে দিয়েছেন বেইজিং ও লন্ডন অলিম্পিকের সোনা জয়ী কিন কাই ও তাঁর সঙ্গী কাও ইউয়ানকে। ব্রিটেনের ইতিহাসে ডাইভিংয়ে এটাই প্রথম সোনা! তা–ও কার হাত ধরে? সেই ক্রিস মিয়ার্স, যাঁর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কত প্রশ্নে চিকিৎসকেরাই উত্তর দিয়েছিলেন—মাত্র ৫ শতাংশ! যুব অলিম্পিক উৎসবে অংশ নিতে ২০০৯ সালে সিডনিতে এসেছিলেন ক্রিস। ভেতরে ভেতরে যে গ্ল্যান্ডুলার ফিভার (গ্রন্থিগত জ্বর) বহন করছিলেন, সেটি জানতেন না। এই জ্বরে পেশি ফুলে শরীরের অঙ্গে চাপ পড়ে। এ অবস্থায় টানা ডাইভিং পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়। ক্রিসের প্লীহা ফেটে যায়। ভয়াবহ রক্তক্ষরণের পর হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ৫ শতাংশ বলে ঘোষণা দেন উপস্থিত চিকিৎসকেরা। নিবিড় পরিচর্যা ও কৃত্রিম ব্যবস্থায় কয়েক দিন থাকার পর বেঁচে ফেরেন ক্রিস। কিন্তু তাঁর দ্বারা আর কখনো ডাইভিং সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। ক্রিস হাসপাতাল থেকে ফেরার পর বিমানে চড়ার মতো সুস্থ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল তাঁর পরিবার। এর মাঝেই ঘটে গেল অঘটন। হোটেল রুমে একদিন খিঁচুনির শিকার হন ক্রিস। সব মিলিয়ে সাত ঘণ্টার খিঁচুনির শিকার হয়ে টানা তিন দিন কোমায় থাকতে হয়। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে শারীরিক অক্ষমতার শিকার হন রোগীরা। কিংবা মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্রিসের ক্ষেত্রে তেমন কিছু না হলেও আর কখনো ডাইভিং করতে যে পারবেন না, সেটা এক রকম পাকাই হয়ে যায়। কিন্তু এসব নেতিবাচক চিন্তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাত্র ১৮ মাসের মাথায় দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নিয়েছেন ১৭ বছরের ক্রিস। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকেও অংশ নিয়েছিলেন এই ডাইভার। ২০০৯ সালে ছেলের ওই ভয়াবহ দুঃসহ সময়ে পাশে ছিলেন বলে পল মিয়ার্সকে অলিম্পিক মশাল বহনের জন্য নির্বাচিত করে ব্রিটিশ অলিম্পিক কমিটি। ক্রিসের কারণেই তো এতটা সম্মান পেয়েছিলেন পল।  কাল পলকে আরেকবার আবেগে ভেসে যাওয়ার, গর্বিত করার সুযোগ করে দিলেন ক্রিস। কজন বাবা বলতে পারেন, আমার ছেলে মৃত্যুকে জয় করে আসা একজন অলিম্পিক সোনাজয়ী! ক্রিস আমাদের কাছেও বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন, মানুষের পক্ষে কত কিছুই না করা সম্ভব!

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

August 2016
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
Scroll To Top