আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কাশ্মিরে সহিংসতাজনিত কারণে কারফিউ এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা চলায় সেখানকার শিশুদের পড়াশোনায় সাহায্য করছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। তারা শিশুদের পড়াশোনা চালু রাখার জন্য মসজিদের মতো অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানকেই বেছে নিয়েছেনে। স্বেচ্ছাসেবীরা নিজেদের ঘর এবং মসজিদকে এখন অস্থায়ী স্কুলে রূপ দিয়েছেন।
গত ৮ জুলাই কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হিজবুল মুজাহিদীন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার প্রতিবাদে সেখানে ৯ জুলাই থেকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরে একটানা কারফিউ, বনধ এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা চলছে। চলমান বিক্ষোভে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০ জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে। কারফিউ চলায় সেখানকার স্কুল-কলেজ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান একটানা বন্ধ থাকায় দূর দুরান্তের ছাত্র-ছাত্রীরা এখন স্বেচ্ছাসেবীদের অস্থায়ী স্কুলে পড়াশোনা করতে যাচ্ছে।
শ্রীনগরের রায়নাওয়াড়ি এলাকার মসজিদে এখন ২০০ শিক্ষার্থীকে স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন।
অস্থায়ী শিক্ষা শিবিরে নিয়মিত পড়াশোনা ছাড়াও সেখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিক্যাল বিষয়েও পেশাদার টিউটরের কাছে পড়ছেন।
২০ জন তরুণ নিজেরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে পাঠ দান করার প্রস্তাব দেয়ার পর মসজিদের দায়িত্বশীলরা ওই স্কুলের সূচনা করেন। চাঁদা তুলে চেয়ার, টেবিল এবং অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ করা হয়েছে।
চলমান পরিস্থিতির কারণে সেখানে বন্ধ হয়ে থাকা কিছু সরকারি স্কুল থেকেও ওই সব অস্থায়ী স্কুলে আসবাবপত্র ধার দেয়া হয়েছে।
সেখানকার শিশুদের অবশ্য ওইসব বিকল্প স্কুলে পৌঁছানোর জন্য সড়কে মোতায়েন ভারী নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীরা ফেরার সময় দলবেঁধে এমন রাস্তা দিয়ে যায় যে এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের উপস্থিতি কম থাকে।
বিকল্প স্কুল চালানোর জন্য অবশ্য স্বেচ্ছাসেবীদের কাজ মোটেও সহজ হয়নি। খালিদ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী জানান, বিকল্প পড়াশোনার ধারণা আচমকা বাস্তবায়িত হয়নি। প্রথমে আমরা ছাত্রদের খোঁজে জরিপ চালিয়েছি, তারা কোন শ্রেণিতে পড়ে তা জানা হয়েছে। এরপর তাদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষক সন্ধান করা হয়েছে।’
সেখানে কয়েকটি বিয়ে বাড়িতেও বিকল্প স্কুল চালানো হচ্ছে। কারণ, সহিংসতা শুরু হওয়ার পর অধিকাংশ বিবাহ অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।