নিজস্ব প্রতিবেদক :
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী তার দণ্ড পুনর্বিবেচনা যে আবেদন করেছিলেন তা খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে তার মৃত্যুদণ্ডই বহাল থাকলো।
মঙ্গলবার সকালে শতাধিক আইনজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, দেশি-বিদেশি সংবাদকর্মীর উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বধানী পাঁচ সদস্যের আপিলবেঞ্চে রিভিউ আবেদন খারিজের এই আদেশ দেন।
আপিল বিভাগের বেঞ্চের অন্য বিচারকরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।
৬৩ বছর বয়সী জামায়াত নেতা মীর কাসেম এখনও রয়েছেন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে। রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় এখন তার সামনে খোলা থাকলো কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ।
মানবতাবিরাধী অপরাধে দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতদের মধ্যে এর আগে রিভিউ খারিজ হয়েছিল আব্দুল কাদের মোল্লা, মো. কামারুজ্জামান, আলী আহসান মো. মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মতিউর রহমান নিজামীর। রিভিউ খারিজের পর তাদের সবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মীর কাসেম আলীর রিভিউয়ে গত ২৪ ও ২৮ আগাস্ট দুই দিন শুনানি করার পর রায়ের তারিখ ঠিক করে দেন আপিল বিভাগ। আজ রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রিভিউ শুনানির পর আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিৎ হবে না। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, কাসেমের সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকবে।
মীর কাসেম আলীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন মেয়াদে তাকে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর খালাস চেয়ে মীর কাসেম আলী আপিল করেন।
ওই আপিলের ওপর শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম হত্যার দায়ে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে চলতি বছরের ৮ মার্চ সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিলেন।
রায় ঘোষণার এক মাস পরে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয় গত ৬ জুন। ওই দিনই রায়ের কপি কারাগারে পৌঁছে এবং মীর কাসেম আলীকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। এরপর তিনি রিভিউ আবেদন করেন। আবেদনে মীর কাসেম আলীকে নির্দোষ দাবি করে ১৪টি যুক্তি তুলে ধরা হয়।