আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নেপালে এভারেস্টের চূড়ায় উঠার মিথ্যা দাবি করে পর্বতারোহণে ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে ভারতীয় এক পর্বতারোহী দম্পতি। নেপালের কর্মকর্তরা জানান, প্রথম ভারতীয় দম্পতি হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণের দাবি করেছিলেন দিনেশ ও তারকেশ্বরী রাঠোর। মে মাসে তারা ওই দাবি করেন এবং এভারেস্টের চূড়ায় তাদের ছবি প্রকাশ করেন।
কিন্তু অন্যান্য পর্বতারোহীরা ছবিগুলোর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। তাদের দাবি ছিল, ছবিগুলো অবশ্যই জাল। যদিও রাঠোর দম্পতি ওই দাবি অস্বীকার করে এবং নিজেদের এভারেস্ট বিজয়ের প্রমাণ হিসেবে চূড়ায় তোলা ছবি জমা দেয়।
পরে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর পর্বতারোহী সত্যারুপ সিধান্থা সাংবাদিকদের বলেন, রাঠোর দম্পতি প্রমাণ হিসেবে যে ছবি জমা দিয়েছে সেগুলো আসলে তার ছবি।
সংবাদ সম্মেলনে এভারেস্টে আরোহণ শুরু থেকে চূড়ায় পৌঁছাতে যে কয়দিন সময় লাগার কথা রাঠোর দম্পতি জানিয়েছিলেন তা নিয়ে সন্দেহ আরও দানা বাঁধতে থাকে।
বিবিসি’র খবরে বলা হয়, বেজক্যাম্প থেকে চূড়ায় পৌঁছানো পর্যন্ত তারা যে সময় লাগার কথা বলেছেন অত দ্রুত চূড়ায় পৌঁছানো সম্ভব নয় বলে দাবি অন্যান্য পর্বতারোহীদের। এছাড়া, তারা যে ছবি জমা দিয়েছেন সেগুলোতে দুই সেট ভিন্ন ভিন্ন পোশাক ও জুতা দেখা গেছে।
এরপর নেপাল সরকার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। সোমবার ওই তদন্ত শেষ হয় এবং তদন্ত কমিটি জানায়, রাঠোর দম্পতি বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতের চূড়ায় আরোহরণের যে ছবি প্রকাশ করেছে তা ভুয়া।
নেপালের পর্যটন অধিদপ্তর প্রাথমিকভাবে দিনেশ ও তারকেশ্বরী দম্পতিকে এভারেস্টের চূড়ায় উঠার সনদ দিয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর তারা ওই সনদ বাতিল করে।
পর্যটন অধিদপ্তরের প্রধান সুদর্শন প্রসাদ ধাকাল বলেন, রাঠোর দম্পতি যে ছবি জমা দিয়েছিল সেগুলো বিশ্লেষণের পর দেখা যায় তারা ছবিতে নিজেদের বসিয়েছে। ছবিতে তাদের হাতে ধরা ব্যানার আসলে অন্য একজন এভারেস্ট বিজয়ী ভারতীয় পর্বতারোহীর হাতে ধরা ছিল। “তদন্তে তাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা আদায়ের নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও তারা সহযোগিতা করেনি। তাদের সাহায্যকারী দুই শেরপাও পলাতক রয়েছে।”
“এই নিষেধাজ্ঞা নিশ্চিতভাবেই পর্বতারোহীদের নিয়ম অনুসরণে সতর্কবার্তা প্রদাণ করবে।” ভারতীয় পুলিশে কন্সটেলব পদে কর্মরত রাঠোর দম্পতির বর্তমান কর্মস্থল পশ্চিমের শহর পুনে।