Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা মানছে না: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ

আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা মানছে না: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  

নিউইয়র্ক ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স’র বিশেষ অতিথি হিসেবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ এক আলোচনা সভায় মার্কিন নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন।

আমেরিকার সাংবাদিক, চিন্তাবিদ, গবেষকদের সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরমাণু সমঝোতার পর মার্কিন আচরণ ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ এবং প্রতিশ্রুতি পালনে ইরানের দৃঢ় অবস্থান ও কর্মকাণ্ডের নানা দিক তুলে ধরেছেন। জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরমাণু সমঝোতাকে ঠিকই মেনে নিয়েছেন ও এ সংক্রান্ত নথিপত্রে সই করেছেন কিন্তু ওই সমঝোতা পুরোপুরি বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ তারা নেননি।

আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে অন্যায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে ইরানের সঙ্গে লেনদেনকারী ইউরোপের ব্যাংকগুলোকে কোটি কোটি ডলার জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়েছে। মার্কিন এ আচরণ আন্তর্জাতিক অবাধ বাণিজ্য নীতির পরিপন্থী এবং অবৈধ। জরিমানা কিংবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ভয়ে ইউরোপীয় ব্যাংকগুলো ইরানের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়ন শুরুর আট মাস পেরিয়ে গেলেও ইউরোপের বড় বড় ব্যাংকগুলো এখনো ইরানের সঙ্গে ব্যাংকিং লেনদেন শুরু করতে আগ্রহী নয়। এমনকি আমেরিকা এ ব্যাপারে তাদের নীতি কি হবে সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু বলছে না। এ থেকে পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে তাদের অনীহা বা ষড়যন্ত্রের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। মার্কিন কংগ্রেসও এমন কিছু প্রস্তাব অনুমোদন করেছে যার ফলে পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়ন আরো কঠিন ও জটিল হয়ে পড়েছে।

ইরানের জনগণ এসব ষড়যন্ত্রের বিষয়টি খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করছে। এ পরিস্থিতিতে ইরানের জনগণ শুধু পরমাণু ইস্যুতে মার্কিন সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়েছে তাই নয় একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যে কোনো আলোচনার ব্যাপারেও তারা আমেরিকার ওপর আস্থা রাখতে পারছে না।

নিউইয়র্ক ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স’র বিশেষ অতিথির ভাষণে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকার পক্ষ থেকে ইরান ভীতি ছড়ানোর চেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, কয়েক মাস আগে নিউইয়র্কের একটি আদালত ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার অজুহাতে ইরানের ১,১০০ কোটি ডলার আটকে দেয়। অথচ ওই হামলার ঘটনায় একজন ইরানি নাগরিকও জড়িত ছিল না।

এমন সময় মার্কিন আদালত ইরানের অর্থ বাজেয়াপ্ত করার পদক্ষেপ নিয়েছে যখন হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা আল কায়দা ও দায়েশ সন্ত্রাসীদেরকে সৌদি আরবের অর্থ ও অস্ত্র সহায়তার কথা জেনেও তা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। সন্ত্রাসীদের প্রতি সৌদি আরবের প্রকাশ্য ও গোপন সহযোগিতার বিষয়ে আমেরিকা টুশব্দটিও করছে না। এমনকি ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তরা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে-মর্মে কংগ্রেসের উত্থাপিত প্রস্তাবেও প্রেসিডেন্ট ওবামা ভেটো দিয়েছেন।

আজ থেকে তিন বছর আগে উগ্রবাদী ও দায়েশ সন্ত্রাসীরা যখন এতোটা প্রভাব বিস্তার করেনি তখনও ইরানের প্রেসিডেন্ট উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতা মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কারণ ইরান তখনই বুঝেছিল এ প্রক্রিয়া চলতে থাকলে এ অঞ্চলের দেশগুলো অচিরেই বড় ধরণের সংকটে পড়বে। শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়ার বহু দেশও আজ সন্ত্রাসবাদের কবলে পড়েছে। তাই শুধু যে পরমাণু ইস্যুতেই আমেরিকা বিশ্বাস যোগ্যতা হারিয়েছে তাই নয় একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ ও মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলোতেও সবার আস্থা হারিয়েছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

September 2016
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Scroll To Top