নিজস্ব প্রতিবেদক : বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে চায় বিক্রি হওয়া রোমানা আক্তার রোকছানা। রোকছানা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নলচিরা ইউনিয়নের রওজপ আলী বাড়ি জামাল উদ্দিনের মেয়ে। সে বর্তমানে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের একটি বাড়িতে রয়েছে।
জানা গেছে, সাত বছর আগে পাশের বাড়ির মিনা নামে এক দূর সম্পর্কের ফুফু তাকে চট্টগ্রামের কক্সবাজারে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যান। পরে সেখানে তাকে এক বাড়িওয়ালার কাছে বিক্রি করে পালিয়ে যান মিনা।
সম্প্রতি দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উপকূল বাঁচাও আন্দোলনের (উবা) সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেনের সঙ্গে ফেসবুকে কথা হয় রোকছানার। এসময় সে তার বাবা-মা, বাড়ি ও স্কুলসহ পুরো ঠিকানার কথা জানায়। দীর্ঘদিন কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় বাড়িতে ফিরতে পারেনি সে। এছাড়া নদীভাঙার কারণে নিজ এলাকার চিত্র অনেকটা পাল্টে যাওয়ায় বাড়িতে ফেরার সাহস পায়নি রোকছানা।
রোকছানা জানায়, তার মায়ের নাম খদিজা খাতুন। চার ভাই ফরিদ, আজাদ, নিরব হোসেন ও আলাউদ্দিন। সে ২০০৯ সালে নলচিরা কাউনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। তার স্কুলশিক্ষক আবুল কাশেম। পরে খোঁজ নিয়ে তার বাড়ি ও বাবা-মায়ের সন্ধান পাওয়া গেছে।
স্কুলশিক্ষক আবুল কাশেম জানান, ২০০৯ সালে পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী ছিলো রোকছানা। হঠাৎ করেই এক মহিলা ও আরো একটি শিশুসহ সে হারিয়ে যায়।
রোকছানার ভাই মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, সাত বছর আগে বাড়ি থেকে নোটবই কেনার জন্য বাজারে যায় বোন। এর পর সে আর ফিরে আসেনি। বহু খোঁজাখুঁজির পরেও তাকে পাইনি। কাল সকালে সারোয়ার ফোন করে বোনের সন্ধানের কথা জানালো। এ কথা শুনে আমাদের বাড়িতে এখন উৎসবের আনন্দ বইছে।
তিনি আরো জানান, ওই সময় তার গ্রামের আরো তিনটি মেয়ে হারিয়ে যায়। তাদেরও আজ পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি ধারণা করে বলেন, নিখোঁজদের মধ্যে মিনার বয়স ছিলো ২০ বছর। সেজন্যই আমরা তাকে সন্দেহ করছি।
উবার সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বলেন, সে মোবাইলে রোকছানার সঙ্গে কথা বলেছেন। সে জানিয়েছেন, মিনাই তাকে নিয়ে এসে এখানের এক বাড়ির মালিকের কাছে বিক্রি করে পালিয়ে যায়। বর্তমানে ওই বাড়ির মালিক তাকে নির্যাতন করেন। বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজকর্মে জড়ানোর জন্য প্রলোভন দেখান।