Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
যুদ্ধের আতঙ্ক ইউরোপ জুড়ে!

যুদ্ধের আতঙ্ক ইউরোপ জুড়ে!

নিজস্ব প্রতিবেদক :  যুদ্ধের আতঙ্ক ভর করেছে পুরো ইউরোপে! ন্যাটোর বিশ্বাস, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) সীমান্তে রাশিয়া ৩ লাখেরও বেশি ৩০ হাজার সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের তর্জন গর্জন মোকাবিলা করতে ব্রিটেন যুদ্ধ বিমান, ট্যাঙ্ক ও সৈন্য পাঠিয়েছে বা পাঠাচ্ছে রাশিয়ার পূর্ব সীমান্তে।

এ অবস্থায় যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কি উদ্বেগ্ন বা ভয় পাওয়া উচিত ? ইউরোপের রাজনৈতিক ও সামরিক বিশ্লেষকরা সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজেছেন।

ব্রিটেনের সান পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু কিছু রাজনীতিক মনে করছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট পুুতিন সৈন্য পাঠিয়ে ইউরোপীয়দের ভয় দেখাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, সেনা সমাবেশের ঘটনাকে ‘গুরুত্বের সঙ্গে’ নেওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে নিজেদের অভিমত দিয়েছেন সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান রিফর্ম থিঙ্ক ট্যাঙ্কের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক পরিচালক ইয়ান বন্ড, সামরিক ঐতিহাসিক প্রফেসর মার্ক এলমন্ড ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মাইক জ্যাকসন।

তারা মনে করেন, রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করতেই হবে। কেননা তারা তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে ন্যাটোকে বিবেচনা করে থাকে। এছাড়া দেশটি অত্যন্ত আক্রমণাত্মক কায়দায় সমরিক মহড়াগুলো করছে।

Putin

তারা ২০০৯ সালেও সামরিক মহড়া করেছিল। সেই সময় কম্পিউটারে সিমিউলিশন করে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে পারমানবিক হামলা চালানো হয়।

একে ভয়ঙ্কর হুমকি বলে অভিহিত করে তারা বলেন, এ ব্যাপারে আপনি চোখ বুজে থাকতে পারেন না। তারা আরো বলেন, তখন পরিস্থিতি যেমন ছিল, এখনো সেই রকমই আছে। কোনো কিছুই পরিবর্তন হয়নি। পুতিনের অবস্থান থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায়, ন্যাটোভূক্ত দেশগুলোকে ভয় দেখিয়ে কোনো কিছু আদায় করে নেওয়া। এই ভয় দেখানের জন্য কিন্তু শক্তি প্রয়োগ করতে হবে না, কেবল মাত্র ‘আওয়াজ’ তুললেই কাজ হবে।

পুতিন মনে করেন, ন্যাটো দেশগুলোকে যদি ভালো মতো ভয় দেখানো যায়, তাহলে তাদের কাছ থেকে যা চাওয়া যায় তাই আদায় করে নেওয়া সম্ভব হবে।

ইউরোপের পূর্ব সীমান্তে  ৩ লাখ ৩০ হাজার সেনা মোতায়েন নিয়ে পুরো ইউরোপে ব্যাপক কথাবার্তা চলছে। এ অবস্থায় আমাদের অনেক রাজনীতিক বলতে পারেন, ‘যে কোনো মূল্যে পুতিনের দাবি-দাওয়া পূরণ করে দিতে হবে’।

এক্ষেত্রে উদাহরণ স্বরূপ, বলা যেতে পারে যে, পুতিন চাইলেন ন্যাটোর সব সৈন্যকে রুশ সীমান্ত থেকে একশ মাইল দূরে সরিয়ে নিতে হবে। কিন্তু তার এই দাবি মানা হলো না। তাহলে তার দাবির অসাড়তা পরিস্কার ফুটে উঠবে।

Putin

ন্যাটোকেও যুদ্ধে জড়ানো সম্ভব হবে না। তার চিন্তাটা যে কতোটা ভুল তাও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যায় যে, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সমরিক শক্তি যথেষ্ট শক্তিশালী, দেশ দুটিকে বশে আনা সহজে হবে না। এছাড়া জার্মানি, পোল্যান্ড ও তুরস্কেরও সামরিক বাহিনী ব্রিটেন ও ফ্রান্সের ন্যায় শক্তিশালী না হলেও তুড়ি মেরে উড়ে দেওয়ার মতো নয়।

একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, এই দেশগুলোর একটিকেও সামরিকভাবে কব্জায় নেওয়া রাশিয়ার পক্ষে সম্ভব নয়।

পুতিন নিজেই দেখিয়েছেন যে, ঝুঁকি নিতে খুব ভালোবাসেন। কিন্তু আসল কথা হলো তিনি হিসেব করে ঝুঁকি নিয়ে থাকেন। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা যায় যে, ঐক্যবদ্ধ ইউক্রেনে কিন্তু সৈন্য পাঠায়নি রাশিয়া।

পুতিন পাগল নন বলে উল্লেখ করে তারা বলেন, পোকার খেলোয়াড়ের মতো সর্বস্ব বিনিময়ে বাজি ধরেন না তিনি। আসলে লুডু খেলার মতো ছক্কা চেলেই তিনি বাজি ধরেন। ছক্কায় কত উঠবে তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

এ সব হিসেব নিকেষ করে বলা যায়, রাশিয়ার অস্ত্রবাজি দেখে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। এ কথা মনে রাখা দরকার যে স্নায়ু যুদ্ধের সময়ও সোভিয়েত ইউনিয়নের হামলার হুমকি ছিল। তাই আমাদের অনেক দৃঢ় হওয়া দরকার। কোনো ছাড় দেওয়াই ঠিক হবে না। শক্ত পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে রাশয়ানদের এমন শিক্ষা দিতে হবে যে, কোনো কিছু করার চেষ্টা করা হলে রক্তাক্ত নাক নিয়ে তাদেরও বড়ি ফিরতে হবে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

October 2016
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Scroll To Top