বাংলাদেশের মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৭৫১ মার্কিন ডলার। এর মানে হলো, বাংলাদেশের একজন মানুষ বছরে গড়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৯ টাকা আয় করেন। তবে এটি কোনো ব্যক্তির আয় নয়। তবে মাথাপিছু আয় কোনো ব্যক্তির একক বা ব্যক্তিগত আয় নয়। এটি একটি দেশের মোট আয়কে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে মাথাপিছু আয় বের করা হয়।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের গত অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়ের চূড়ান্ত তথ্য জানান। পরিকল্পনা কমিশনে এনইসির সম্মেলনকক্ষে একনেক সভা হয়।
চূড়ান্ত হিসাবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়েছে। গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। বাজেটের আগে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাময়িক হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ হয়েছিল। এর ফলে পরপর তিন বছর ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করল বাংলাদেশ।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এর আগে বছরে (২০১৫-১৬) প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
কৃষি, শিল্প ও সেবা—এই তিনটি খাত ধরেই জিডিপি গণনা করা হয়। বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরে শিল্প খাতে সবচেয়ে বেশি ১২ দশমিক ০৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কৃষি খাতে ৪ দশমিক ১৯ আর সেবা খাতে ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, জিডিপির অনুপাতে বেসরকারি বিনিয়োগে খুব বেশি অগ্রগতি নেই। এখনো সরকারি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিই চালিকা শক্তি।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, জিডিপি গণনাসহ পুরো প্রক্রিয়াটি বিশ্লেষণ করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। পুরো বিষয়টি হালনাগাদ করতে পারলে আধুনিক উপায়ে জিডিপি গণনা করা যাবে।
জিডিপির অনুপাতে বিনিয়োগ এখন ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগ ২৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জিডিপির অনুপাতে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ৩০ দশমিক ৫১ শতাংশ। এ ছাড়া গত অর্থবছরে জিডিপির অনুপাতে সরকারি বিনিয়োগ ৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এর অংশ ছিল ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।
বর্তমানে জিডিপির আকার ২৭ হাজার ৪১১ কোটি ডলার। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ২২ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা।