শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় জাবালে নূর পরিবহনের মালিক শাহাদাত হোসেনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস এই অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আগামী ১ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ঠিক করেছেন আদালত। আসামিরা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
ছয় আসামি হলেন জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং দুই চালকের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ। শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসটির চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, চালক ও চালকের সহকারীরা বেশি যাত্রী ওঠানোর লোভে যাত্রীদের কথা না শুনে, তাঁদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে জিল্লুর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়ায়। ঘটনার দিনদুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ জন ছাত্রছাত্রীদের ওপর বাস উঠিয়ে দেন চালক মাসুম বিল্লাহ। ঘটনাস্থলে দুজন শিক্ষার্থী মারা যায়। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সেদিন বাস দুটি দুই থেকে তিন বার ওভার ট্রেকিং করেন।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লুর রহমান উড়ালসড়কের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষি করে। একপর্যায়ে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। নয়জন আহত হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)।
এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।
পরে অভিযান চালিয়ে জাবালে নূরের তিন বাসের তিন চালক এবং তাঁদের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত ১ আগস্ট র্যাবের পক্ষ থেকে জাবালে নূরের একটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেনকে (৬০) গ্রেপ্তারের খবর জানানো হয়।
তদন্ত সূত্রে জানা যায়, জাবালে নূরের যে তিনটি বাসের রেষারেষিতে এই ঘটনা ঘটে, সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭, ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ ও ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় মারা যায় দুই শিক্ষার্থী। এই বাসটি চালাচ্ছিলেন মাসুম বিল্লাহ। ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের চালক ছিলেন জুবায়ের। আর ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০ নম্বরধারী বাসটির চালক ছিলেন সোহাগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য, ২৯ জুলাই দুর্ঘটনার ক্ষেত্র তৈরি হয় তিনটি বাসের চালকদের রেষারেষির কারণে।