আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গণতন্ত্রের নীতি ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো থেকে তুরস্কের সদস্যপদ ছিনিয়ে নেয়ার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবারের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর তুরস্ক সরকার বিদ্রোহী সেনাদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান পাসের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে সোমবার বলা হয়েছে, ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে জড়িত সন্দেহে তুরস্কের ৮ হাজার পুলিশ কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশটির বিচার বিভাগের সদস্য ও সেনাবাহিনীর জেনারেলসহ আরো অন্তত ৬ হাজার জনকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দেশটিতে গণতান্ত্রিক নীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘারিনি ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ব্রাসেলসে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সম্মেলনে তারা বলেন, তুরস্কের নির্বাচিত সরকারের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বোচ্চ মান এবং আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে তুরস্ক সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
মোঘারিনি ও জন কেরি বলেন, অভ্যুত্থানে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে আমাদের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায় এ রকম পদক্ষেপের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন এবং গণতান্ত্রিক শাসন বজায় রাখতে আমরা জোর গুরুত্বারোপ করছি।
এদিকে মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলছে, ইইউর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘারিনি বলেছেন, তুরস্ক যদি পুনরায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করে তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে পারবে না দেশটি।
তিনি বলেন, আমাকে বলতে দিন…একটি বিষয় পরিষ্কার করি : মৃত্যুদণ্ডের বিধান কার্যকর করলে কোনো দেশ ইইউর সদস্য হতে পারবে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগী দেশ হিসেবে যোগ দেওয়ার পর ২০০৪ সালে তুরস্কে মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া ১৯৮৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। ফেডেরিকা মোঘারিনি ব্রাসেলসে বলেছেন, আইনের শাসন থেকে তুরস্ককে পেছনে নিয়ে যাবে এমন পদক্ষেপ ঠেকাতে কোনো অজুহাতের তোয়াক্কা করা হবে না।
উল্লেখ্য, তুরস্কে শুক্রবার রাতে সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। অভ্যুত্থানে বেসামরিক নাগরিকসহ এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেনা সদস্য এবং বিচার বিভাগের কর্মকর্তাসহ আটক করা হয়েছে অন্তত ১৪ হাজার জনকে।