নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থ পাচার মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিম্ন আদালতে দেয়া খালাসের রায় বাতিল করে ৭ বছর কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে হাইকোর্ট। আটক আ আত্মসমর্পণের দিন থেকে তার এই সাজা কার্যকর হবে। এর আগে বিচারপতি আদালত তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছিল।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। একই সঙ্গে পলাতক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত তারেক রহমানের ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে নিম্ন আদালতের দেয়া সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছে। তবে নিম্ন আদালতের দেয়া ৪০ কোটি টাকার জরিমানার পরিবর্তে ২০ কোটি টাকার জরিমানা করেছে। এ মামলায় বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আপিল আবেদনটিও খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
এর আগে ১৬ জুন উভয়পক্ষের শুনানি গ্রহণ শেষে রায় অপেক্ষমাণ রাখেন হাইকোর্ট। গত ২৫ মে দুদক ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আপিল আবেদন দু’টির শুনানি একসঙ্গে শুরু হয়। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তারেক রহমান বিদেশে থাকায় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তবে মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম শুনানিতে অংশ নেন।
২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে করা মামলার রায়ে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন। এ মামলায় তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে দেয়া হয় সাত বছরের কারাদণ্ড; করা হয় ৪০ কোটি টাকা জরিমানা।
তারেক রহমানকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আপিল আবেদন করে। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি দুদকের আপিল গ্রহণ করে তারেক রহমানকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু তিনি আজ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করেননি।
এরপর মামলাটি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কার্যতালিকায় এলে গত ১২ জানুয়ারি ফের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। চার্জশিটে থাকা দুই ঠিকানায় (লন্ডন ও ঢাকা) সমনের নোটিশও পাঠায় আদালত।
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মুদ্রা পাচারের এ মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন মামুন। ২০০৩-২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পন্থায় ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের হিসাবে পাচার করা হয়, যার মধ্যে তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকা তারেক খরচ করেন।
তারেক রহমান আট বছর ধরে ব্রিটেনে রয়েছেন। আর জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৭ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন কারাগারেই আছেন।