নিজস্ব প্রতিনিধি : জঙ্গি ও উগ্রবাদ, বিস্ফোরক, অস্ত্র এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধের তথ্য জানাতে নতুন অ্যাপস তৈরি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) ইউনিট। এই অ্যাপসের মাধ্যমে সন্ত্রাস মদদদাতা ও অর্থদাতাদের সমূলে উদঘাটন করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার (৩১ জুলাই) সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে ‘হ্যালো সিটি’ নামের অ্যাপসটি উদ্বোধন করে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘হলি আর্টিসানে নিষ্ঠুরতার পরই আমরা এ ধরনের অ্যাপসের কথা ভাবতে শুরু করেছি। যে অ্যাপসের মাধ্যমে নিজের পরিচয় না জানিয়েই অপরাধ সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য জানানো যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শুধু বিশ্বাসই নই, প্রমাণ করেছি এদেশে সব ধর্মের মানুষ যে যে যার যার ধর্ম পালন করে। কিন্তু এই সম্প্রীতির ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি চক্র এসব নাশকতা ঘটাচ্ছে।’ এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেন, ‘কেউ তথ্য দিলে আমরা তার পরিচয় প্রকাশ করি না। তারপরও অনেকেই পরিচয় দিতে সঙ্কোচ করেন। তাদের জন্য আমাদের এই অ্যাপসটি কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।’ এদেশ কখনোই পাকিস্তান বা সিরিয়া হবে না বলেও বিপথগামীদের হুঁশিয়ারি দেন আইজিপি। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের শেকড় উপরে ফেলতে আমরা বদ্ধপরিকর। যাতে করে যে কেউ চাইলেই জঙ্গিবাদের অর্থদাতা, মদদদাতা ও আস্তানা সম্পর্কে যে কোনো তথ্য জানাতে পারেন তাই আমরা এই অ্যাপসটি তৈরি করেছি। প্রধানমন্ত্রী আহ্বানে দেশব্যাপী একটি নাগরিক ঐক্য গড়ে উঠেছে মন্তব্য করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এই ঐক্য নষ্ট করতে অনেকেই সচেষ্ট হয়েছেন। তবে আমাদের এই অ্যাপসটি জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় খুবই কার্যকর হবে।’ অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন ডিসি (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কাউন্টার টেরোরিজমের (সিটি) প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হোসেন। প্রসঙ্গত, পরিচয় গোপন রেখেই এই অ্যাপসের মাধ্যমে পুলিশকে চার ক্যাটাগরিতে তথ্য জানানোর অ্যাপসটি প্রাথমিকভাবে অ্যাপসটির শুধু অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন প্রকাশ করা হচ্ছে। এক সপ্তাহ পরে উইন্ডোজ ভার্সন আসবে। এই অ্যাপসটির মাধ্যমে যে কেউই দেশ বা বিদেশ থেকে অপরাধের তথ্য জানাতে পারবে এবং পরিচয় বা মোবাইল নম্বর উল্লেখ না করে। অ্যাপসটির প্রথমেই রয়েছে জঙ্গি ও উগ্রবাদ ক্যাটাগরি। এরপর রয়েছে যথাক্রমে বিস্ফোরক, অস্ত্র এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ। ব্যবহারকারী এর যে কোনোটিতেই প্রবেশ করে তথ্য দিতে পারবে। ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে অনেক অপরাধ দেখেও না দেখার ভান করে সাধারণ মানুষ। কারণ, পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে অপরাধের তথ্য দিলে পরবর্তীতে তাদের নানা ধরনের ভোগান্তির সম্মুখিন হতে হয়। এসব ভোগান্তি দূর করতেই অত্যাধুনিক এই অ্যাপস প্রকাশ করা হচ্ছে। এর আগে, চলতি মাসেই রিপোর্ট টু র্যাব নামের একটি অ্যাপস প্রকাশ করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ওই অ্যাপসে অপরাধ সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য ছবিসহ র্যাবকে জানানো যায়। তবে অ্যাপসটিতে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় প্রকাশ পেয়ে যায়।