নিজস্ব প্রতিনিধি : ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে, যা শুনলে রীতিমত আঁতকে উঠতে হয়। চলতি বছরের প্রথম ছয়মাসে রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সর্বসাকুল্যে ছিল মাত্র ৩০৮ জন। শুধুমাত্র জুলাই মাসেই ৫১০ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০ জন। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নতুন পুরনো মিলিয়ে প্রায় ১০০ রোগী চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও রোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. আয়েশা আকতার জুলাই মাসে পাঁচ শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুর আক্রান্ত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ডেঙ্গুতে চলতি বছর পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে জুনে তিনজন ও জুলাই মাসে দুজন মারা গেছেন। নিহতরা হলেন পপি (১৫), শামীম (২৩), সাইফুন্নাহার ও কাজী রোকসানা (৩২) ও কাকন (১৩)।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে বর্ষা মৌসুম চলছে। এ সময়ে প্রতি বছরই তুলনামূলকভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এবার আগাম বর্ষা চলে আসা ও থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
সম্প্রতি মহাখালী আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইইডিসিআর) এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গত এক দশকের তুলনায় চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
গত সপ্তাহে নগর ভবনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ওয়ার্ড কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১৮ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১২ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, মার্চে ১৮ জন, এপ্রিলে ৩৮ জন, মে মাসে ৫৪ জন, জুনে ১৮৩ জন ও জুলাইয়ে ৫০৮ জন আক্রান্ত হন।
বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৯১ জন চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ঢামেক হাসপাতালে ১৭ জন, মিটফোর্ডে চারজন, সোহরাওয়ার্দীতে তিনজন, হলি ফ্যামিলিতে তিনজন, বারডেমে একজন, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে দুজন, বিজিবি হাসপাতালে সাতজন, বাংলাদেশ মেডিকেলে ছয়জন, ইবনে সিনায় চারজন,স্কয়ার হাসপাতালে ৯ জন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ১৩ জন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ছয়জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে সাতজন, খিদমাহে চারজন, সুমনা ক্লিনিকে একজন ও সালাউদ্দিন হাসপাতালে চারজন ভর্তি আছেন। এ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭৭৫ জন।