নিজস্ব প্রতিবেদক: ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি যাওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘৮১ মিলিয়ন ডলারের পুরোটাই ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে আমরা খুবই আশাবাদী । এর কারণ হচ্ছে, আমি খোদ প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছি।’
এ সময় জন গোমেজ জানান, অর্থ উদ্ধারে সহায়তা চাওয়ার জন্য বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রেসিডেন্ট দুতের্তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ফিলিপাইন সফর করতে পারেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে হ্যাকাররা। এ অর্থ ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) মাকাতি সিটি শাখার চারটি অ্যাকাউন্টে জমা হয়। পরে সেখান থেকে তা উঠিয়ে নেয় জড়িতরা।
ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ
এ ঘটনায় ফিলিপাইনের সরকারের পক্ষ থেকে সিনেটের ব্লু রিবন কমিটিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কমিটির শুনানি চলাকালে ক্যাসিনো জাঙ্কেট অপারেটর কিম অং তার কাছে ১৫ মিলিয়ন ডলার থাকার কথা স্বীকার করেন এবং পরে তা দেশটির অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) কাছে ফেরত দেন।
ফিলিপাইনের আইন অনুযায়ী, কোনো তৃতীয় পক্ষ আদালতে দাবি উত্থাপন না করলে এ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দেওয়া হবে। তবে এর জন্য মালিকানার সপক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে ফিলিপাইনের বিচার বিভাগ (ডিওজে)। শুক্রবার ডিওজের কাছে অর্থের মালিকানা দাবিসংক্রান্ত একটি হলফনামা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদল জমা দিয়েছে।
এদিকে রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ ছাড় বন্ধের অনুরোধ জানানোর পরেও তা অনুসরণ না করায় চুরির ঘটনার দায় আরসিবিসির নেওয়া উচিত। ফিলিপাইনে সফররত প্রতিনিধিদলে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি বলেছেন, আরসিবিসি ৮১ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হতে পারে।
এদিকে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অর্থ চুরির ঘটনায় আরসিবিসিকে এক বিলিয়ন পেসো (২১ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করা হয়েছে। দেশটির কোনো ব্যাংকের ওপর ‘নজরদারিমূলক জরিমানার পদক্ষেপ’ হিসেবে এটাই সবচেয়ে বড় অঙ্ক বলে জানিয়েছে তারা।
আরসিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এক বছরে দুটি কিস্তিতে এ অর্থ পরিশোধ করবে।