নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনী ক্রসফায়ারে হত্যাকা- ঘটাতে বেশি পারদর্শীতা দেখাতে পেরেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনী তাদের দক্ষতা অর্জনে বিভিন্ন দেশে বহু টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণ নিয়েছে, বিদেশে ট্যুর করেছে। কিন্তু একজন নিরীহ মানুষকে পিঠমোড়া দিয়ে বদ্ধ একটি ঘরে রেখে মেরে ফেলার মধ্যে কি ধরণের দক্ষতা আছে তা বোধগম্য নয়। এজন্যতো আলাদা প্রশিক্ষণেরও দরকার নেই।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাম মোর্চার কনভেনশনে তিনি একথা বলেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশে অত্যন্ত নিরাপদ এলাকা বলে পরিচিত গুলশান। সেখানেই যে নির্মম ঘটনা ঘটে গেলো তাতে প্রশ্নই জাগে এর আগে যে হাজার হাজার মানুষ গ্রেফতার করা হয়েছে তারা কারা ?
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত ওই ১৫ হাজার লোক এখন কই? কিভাবে আছেন তারা?
তিনি বলেন, যখনই দেশে বড় ধরণের কিছু ঘটে তখনই বিভিন্ন ধরণের দেশ বিরোধী চুক্তি সম্পাদিত হয়। গুলশানের ঘটনার পর পর জাতি যখন প্রতিবাদ মিছিল করছে তখনই ভারতের সাথে রামপাল চুক্তি হয়ে যায়। দেশের স্বার্থ রক্ষার নাম করে চুক্তি হয় আমেরিকার সাথে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার যে মানসিকতায় রাষ্ট্র চালাচ্ছে, তার সাথে জঙ্গিবাদের দর্শনের কোনো পার্থক্য নেই। জঙ্গিবাদের দর্শন হলো- ‘আমার মতই শ্রেষ্ঠ। ভিন্নমত না জায়েজ, হত্যা করা তাই সঙ্গত।’
তিনি আরো বলেন, সরকার নিজেদের জনবিরোধী কাজকেই সঠিক মনে করছে। গণবিরোধীতা তার কাছে অপরাধ। ক্রসফায়ার তার কাছে জায়েজ, সুন্দরবন রক্ষার দাবি তার কাছে না জায়েজ। যাকে সরকার উন্নয়ন বলবে, সবাইকেই তা উন্নয়ন বলতে হবে। ফলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বাহ্যিক তৎপরতা যেটি দৃশ্যমান, তা লোক দেখানো ব্যাপার। জঙ্গিবাদী মতাদর্শ দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করা যায় না।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী), কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী।
নজরুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কনভেনশনে আরো বক্তব্য রাখেন- সাংবাদিক গোলাম মর্তুজা, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর আহম্মেদ, নারী নেত্রী অধ্যাপক শ্যামলী শীল, ঢাবি শিক্ষক সামিনা লুৎফা নিত্রা, ব্যারিস্টার জোর্তিময় বড়ুয়া, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল হাকিম লালা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহবায়ক হামিদুল হক, জাতীয় গণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা রজত হুদা, কৃষক নেতা নিমাই মন্ডল, শ্রমিক নেতা ইসমাইল হোসেন, প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ছাত্র নেতা নাঈমা খালেদ মনিকা প্রমুখ।