Friday , 23 May 2025
নিউজ টপ লাইন
একাধিক প্রেমের কারণেই খুন হন মুন্নী

একাধিক প্রেমের কারণেই খুন হন মুন্নী

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাধিক প্রেম করার কারণেই চট্টগ্রামের বেসরকারি পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মুন্নী খুন হয়েছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে মুন্নীর প্রাক্তন প্রেমিক রমজান আলী প্রকাশ রাহাত। এই খুনের সঙ্গে রাহাত ছাড়াও অপর এক প্রেমিক, মুন্নীর বান্ধবী ও বান্ধবীর প্রেমিক সম্পৃক্ত বলেও জানিয়েছে রাহাত।

এর আগে ১৩ মে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় বন বিভাগের ইকোপার্ক থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে মুন্নীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের তিনদিন পর মুন্নীর লাশ শনাক্ত হয়। এরপর তিনমাস পর মঙ্গলবার ভোরে মুন্নীর প্রাক্তন প্রেমিক রাহাতকে গ্রেফতার করে এই খুনের রহস্য উন্মোচনে সক্ষম হয় সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ।

রাহাত আদালতে স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে, সে নিজে এবং মুন্নীর বান্ধবী যুথীর প্রেমিক মারুফ ও মুন্নীর আরেক প্রেমিক মাসুমসহ ছয়জন মিলে মুন্নীকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং সীতাকুণ্ড পার্কে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।

চট্টগ্রামের পটিয়ার আবুল কালাম ও হাসনা আরা বেগমের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মুন্নী সবার বড়। মুন্নী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে মীপ্স নিউরাল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে পড়শোনা করতো। এই ইনস্টিটিউটে পড়ার সময় থেকেই একই ইনস্টিটিউটের ছাত্র রাহাতের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

জবানবন্দিতে রাহাত জানায়, একই ইনস্টিটিউটে পড়ার সুবাদে মুন্নীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় দেড় বছর পর্যন্ত চলে তাদের প্রেম। এক পর্যায়ে মুন্নী রাহাতকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু রাহাত তার বড় ভাই ও বোন অবিবাহিত রয়েছে জানিয়ে মুন্নীকে এখন বিয়ে করতে পারবে না বলে জানায়। এতে করে তাদের সস্পর্কে ফাটল ধরতে শুরু করে।

এরই মধ্যে মুন্নী ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করার পর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে নগরীর পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। এখানে ভর্তির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত মাসুম নামে অপর একজনের সঙ্গে নতুন করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মাসুমের সঙ্গেও মুন্নীর প্রেম দীর্ঘদিন চলতে থাকে।

এক পর্যায়ে মাসুম মুন্নীর আগের প্রেমের ঘটনা জানতে পারলে সম্পর্কে ফাটল ধরে। মাসুমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মুন্নীর বান্ধবী যুথীর প্রেমিক মারুফ নামের অপর এক ছাত্রকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় মুন্নী। কিন্তু মারুফ যুথীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় মুন্নীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এতে মুন্নী ক্ষুদ্ধ হয়ে মারুফ ও বান্ধবী যুথীর কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। এতে মারুফ ও যুথী মুন্নীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

মারুফ মুন্নীর ওপর প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে। সে মুন্নীর পুরাতন প্রেমিক রাহাত ও মাসুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা সবাই মিলে মুন্নীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে একমত হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বেড়াতে যাওয়ার নাম করে গত ১৩ মে যুথী মুন্নীকে নগরীর সিটি গেট এলাকায় নিয়ে আসে। সেখানে একটি মাইক্রোবাসে অপেক্ষা করতে থাকে রাহাতসহ মাসুম ও যুথীর প্রেমিক মারুফ। তারা সবাই একই মাইক্রোবাসে সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে যায়।

সারাদিন ঘোরাঘুরি করে খাওয়া দাওয়ার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে পার্কের ভেতরে একটি বসার বেঞ্চে নিয়ে যায় মুন্নীকে। এক সময় মারুফের সঙ্গে মুন্নীর ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে মারুফ ধারালো ছুরি দিয়ে মুন্নীকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এই সময় রাহাতও চাপাতি আর ছুরি দিয়ে মুন্নীকে কোপাতে থাকে।

এক সময় মুন্নী বাঁচার আকুতি জানায়। কিন্তু তারা নির্মমভাবে মুন্নীকে কোপাতে থাকে। এ সময় মুন্নী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মুন্নীর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর হত্যাকারীরা মুন্নীর লাশ জঙ্গলের মধ্যে ফেলে বাসায় ফিরে যায়। পরদিন বন বিভাগের কর্মীরা মুন্নীর ক্ষত বিক্ষত লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে মুন্নীর লাশ উদ্ধার করে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

May 2025
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
Scroll To Top