নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর খিলক্ষেতে চাঞ্চল্যকর নাজিম হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার ভোরে খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো শাখা।
গ্রেফতার দুইজন হলেন- মো. সবুজ মিয়া (৪৮) ও হারেছা (৪৯)।
গত বছরের ১৭ এপ্রিল খিলক্ষেত এলাকার নিহত নাজিমের পিতা মো. জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে খিলক্ষেত থানায় হত্যাসহ মরদেহ গুমের মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-১১। মামলা প্রথমে খিলক্ষেত থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। থানা পুলিশ তদন্ত শেষ করার পূর্বেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।
সিআইডি প্রায় ১ বছর তদন্ত শেষে এজাহারভূক্ত একজনকে বাদ দিয়ে বাকি ৬ জনসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। এই ১৪ জনের মধ্যে ৩ জনকে থানা পুলিশ ও একজনকে সিআইডি গ্রেফতার করে এবং ৫ জন কোর্টে আত্মসমর্পণ করে। বাকি ৫ আসামি পলাতক ছিল।
আদালত এজাহারভূক্ত এক জনকে বাদ দেয়ার কারণে অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। পিবিআই ঢাকা মেট্রো পুলিশ পরিদর্শক মো. আক্রাম হোসেন মামলাটি তদন্ত করছেন।
পিবিআই ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত এসপি মিনা মাহমুদা জাগো নিউজকে বলেন, মো. নাজিম ও আসামি মো. রাজন খিলক্ষেত থানাধীন বিশ্বরোড সংলগ্ন মস্তুল গ্রামে আসামি নাসির উদ্দিনের বাড়ীতে কবুতর চুরি করতে গেলে আসামি মো. ইউনুছ বুঝতে পেয়ে চোর চোর বলে চিৎকার শুরু করে এবং নাজিম ও আসামি মো. রাজন এর পিছু ধাওয়া করে। এক সময় নাজিমকে ধরে ফেলে ও রাজন পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়।
নাজিমকে ধরার পর সবুজ মিয়া ও হারেছাসহ আসামি মো. নাসির, ইসমাইল, আকরাম, খোকন, সাইফুলসহ আরো ১৫/২০ জন মিলে নাজিমকে ইব্রাহীমের দোকানের সামনে অমানবিকভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে কোমড়ে ইট ঝুলিয়ে মস্তুল বালু নদীতে ডুবিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
ভিকটিম নাজিমকে পিটিয়ে পানিতে ডুবিয়ে দেয়ার গোপন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন টিভির সংবাদেও দেখানো হয়।
পিবিআই কর্মকর্তা মিনা মাহমুদা বলেন, পিবিআই ঢাকা মেট্রো মামলাটি তদন্তকালে গোপন সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার ভোর রাতে অভিযান পরিচালনা করে পলাতক আসামি মো. সবুজ মিয়াকে মস্তুল গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ঘর এবং হারিছাকে একটি মুরগির ফার্ম থেকে গ্রেফতার করে।
বাকি পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তদন্ত কাজ অনেক দূর এগিয়েছে বলেও জানান তিনি।