সচিবালয় প্রতিবেদক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ডে শুধু বড় ভাই নয়, রাজনীতি করেন এমন অনেকে জড়িত। এদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ড দেশকে জঙ্গিরাষ্ট্র ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের অংশ মাত্র। দেশিয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারিরা এর সঙ্গে জড়িত।’
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাবেলা সিজার হত্যাকা- নিয়ে বিভিন্ন মহল দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছিল। তখন প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, আমিও বলেছি, এটা আইএস-এর কর্ম নয়। এটা আন্তর্জাতিক ও দেশিয় ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। তাবেলা হত্যাকাণ্ডের আলামত ও গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের দেয়া সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আজ সেটাই বেরিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে পরিষ্কার হয়ে গেছে তাবেলা হত্যাকা-ের পেছনে কারা ছিল, কি উদ্দেশ্য ছিলো ও কেন হত্যা করা হয়েছে। তার কিছু বিষয় সম্পর্কে পুলিশ কমিশনারও বলেছেন। মূলত গ্রেপ্তারকৃতরা ভাড়াটে খুনি। যে কোনো একজন বিদেশিকে খুন করার জন্যই তাদের নিয়োগ করা হয়েছিল।
এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কে তা আমরা জানি। দু একদিন পর এ বিষয়ে আরো পরিষ্কার করে বলব। তবে যতটুকু জানি তাতে বলা যায় এর নেপথ্যের ব্যক্তিরাই ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও নায়ক। তার সঙ্গে আরো অনেক কিছুই জড়িয়ে আছে। এজন্য একটু দেরি হচ্ছে। দুএকদিন পরে সব খোলাসা করে বলব।’
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘অবশ্যই, পরিকল্পনাকারি বড় ভাইয়ের সঙ্গে আরো কিছু রাজনীতিবিদ তাবেলা হত্যায় জড়িত। তাদের খুব শিগগির গ্রেপ্তার করা হবে। এদের মধ্যে যারা দেশে আছেন তারা আমাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। আর যারা বিদেশে তাদের দেশে নিয়ে আসা হবে। কারণ, আমরা মনে করি, কোনো দেশ সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেবে না।’
দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকার কোনো ‘জজ মিয়া’ নাটক সাজাতে চায় না বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকেই বলছি এসব হত্যাকা-ের ব্যাপারে সরকার কিন্তু কখনও কিছু আড়ালে আবডালে রাখে না। আমরা সঠিক নিউজটাই প্রকাশ করি। আমরা জজমিয়া তৈরি করি না, ঘটনা ধামাচাপা দেই না। সেজন্য একটু দেরি হচ্ছে।’
জাপানি নাগরিক খুনের ঘটনাও একই কারণে হয়েছে বলে মনে করেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘ভিন্ন টিম খুন করলেও পরিকল্পনাকারিদের উদ্দেশ্য এক ছিল। দেশকে অস্থিতিশীল করতে এক জায়গা থেকেই দুই বিদেশিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’ জাপানি নাগরিক হত্যাকারিদেরও খুব দ্রুত ধরা হবে।’
উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিদেশি হত্যায় নেতাদের জড়ানো হচ্ছে, বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের অভিযোগ সত্য নয়। বিনা প্রমাণে আমরা কোনো কিছু করি না। আমাদের কাছে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা কথা বলছি।’
হোসেনি দালানের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে গ্রেনেড হামলার ঘটনার তদন্তে অগ্রগতি সম্পর্কে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ এসে গেছে। জড়িতদের আমরা তাড়াতাড়ি ধরে ফেলব।’