24Ghanta khobor: পুরান ঢাকার হোসেনি দালান সপ্তদশ শতক থেকেই শিয়া সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে তীর্থস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শোকাবহ মহররমে হোসেনি দালানে তাজিয়া মিছিলসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়। অবাধে যাওয়া-আসা করা যেত সেখানে। তবে এখন সে স্থানে ভীতিকর ও নিষ্প্রাণ পরিবেশ বিরাজ করছে।
হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে মহানবীর (সা.) দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) শাহাদাত বরণ করেন। এই শোকাবহ ঘটনার স্মারক হিসেবে নির্মাণ করা হয় হোসেনি দালান। এখানে শিয়া সম্প্রদায়ের নানা আচার অনুষ্ঠান পালন করা হয়ে থাকে। প্রতি বছরই মহররম উপলক্ষে এখান থেকে ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। এতে প্রচুর জনসমাগম হয়। এ ছাড়া দর্শনার্থীদের সমাগমে সবসময়ই সরগরম থাকত এ দালানটি।
গত শুক্রবার গভীর রাতে আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে সেখানে তিনটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে একজন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হন। এরপর থেকে ওই এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা রয়েছে। তবুও সেখানে আতঙ্ক কাটেনি।
মঙ্গলবার সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, সেচ্ছাসেবীদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন হোসেনি দালানটি। এখানে প্রবেশের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এ সময় মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
এখনও আতঙ্ক বিরাজ করায় সেখানে আগের মতো মানুষের ভিড় নেই। এ বিষয়ে সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ফারুক জানান, এখানে প্রতিদিন অসংখ্য লোকের যাতায়াত ছিল। বোমা হামলার পর থেকে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় আবারও হামলা হতে পারে, এ আশঙ্কায় মানুষজন এখানে আসার সাহস পাচ্ছেন না। এতে নিষ্প্রাণ হয়ে পড়েছে হোসেনি দালান।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চান তারা। ৪০০ বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখে হোসেনি দালান আবারো উৎসব মুখর হয়ে উঠবে এমনটাই আশা তাদের।
নিরাপত্তার বিষয়ে হোসেনি দালানের সুপারভাইজার ফিরোজ হোসেন জানান, বোমা হামলার পর হোসেনি দালানের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। সরকার এখন নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে।