Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
তিন বছর পর শেরে বাংলায় যাচ্ছেন আশরাফুল

তিন বছর পর শেরে বাংলায় যাচ্ছেন আশরাফুল

স্পোর্টস ডেস্ক : সব কিছু ঠিক থাকলে শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামই হতো তার সেকেন্ড হোম। ক্লাব ও জাতীয় দলের প্র্যাকটিস ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ব্যাটিং ও বোলিংটা ঝালিয়ে নিতে এবং ফিটনেস লেভেল ঠিক রাখতে নিশ্চয়ই জিম করতে হয়ত প্রতিদিন হোম অফ ক্রিকেটেই যেতেন টেষ্টের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান।

কিন্তু তা আর ছিল কই? অনৈতিক পথে হেঁটে আশরাফুল নিজেই তলিয়ে গেছেন অতলে। নিষেধাজ্ঞার খারায় পড়ে বন্ধ ক্রিকেটীয় সব কর্মকান্ড। নিষিদ্ধ আশরাফুল সে অর্থে গত তিন বছর শেরে বাংলার মুখো হননি। হবার আসলে অবকাশও ছিল না। নন্দিত আশরাফুল হয়ে পড়েছিলেন নিন্দিত। সমালোচিত। প্রিয় ক্রিকেটার আশরাফুল ম্যাচ গড়াপেটায় জড়িত জেনে ক্ষোভে `পাতানো খেলায় জড়িত হবার মত জঘন্য কাজ করলেন আশরাফুল` খুব কাছের মানুষও ক্ষুব্ধ হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।

তার নিজের ভিতরেও একটা অপরাধবোধ তাড়া করে বেড়িয়েছে। আমি অনৈতিক কাজ করে নিষিদ্ধ। কি করে পরিচিত মানুষগুলোকে মুখ দেখাই? চোখাচোখি হলে কি করবো? তারাই বা কি ভাববে? কি বলবে রাজ্যের চিন্তা ভাবনা এসে বাসা বেধেছিল মনে। তাই বাস্তবতাকে মেনেই সেই চিরচেনা শেরে বাংলার সবুজ চত্বর থেকে দূরে থাকা।

সব রকম ক্রিকেটীয় কর্মকান্ডে নিষিদ্ধ হওয়ায় মিরপুর বিসিবি অফিস, শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, একাডেমি মাঠ ও ইনডোর কোথাও যাওয়া হয়নি। যে মাঠের ঘাস, উইকেট ছিল অনেক কাছের। কত সকাল, দুপুর ও বিকেল প্র্যাকটিস, ম্যাচ আর ড্রেসিং রুমে কেটেছে সেই চিরচেনা ভুবন হয়ে পড়েছিল অচেনা। আশরাফুল হয়ে পড়েছিলেন নীড় হারিয়ে ফেলা পাখি।

জাতীয় দলে ফেরার নিষেধাজ্ঞা না কাটলেও ক্রিকেটীয় কর্মকান্ডের ফেরার ছাড়পত্র পাওয়ায় এখন সেই হারানো নীড়ে আবার ফেরার সুযোগ এসেছে। তার ঘরোয়া ক্রিকেটে সম্পৃক্ত হবার আর বাধা নেই। তাই নিষেধাজ্ঞা মুক্ত আশরাফুল দীর্ঘ তিন বছরের বেশি সময় পর আজ দুপুরে আবার যাবেন শেরে বাংলায়।

আশরাফুল বলেন, বেসরকারি একটি টেলিভিশনে অনুষ্ঠান শেষে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে শেরে বাংলায় যাব। সিইও সুজন ভাইয়ের ( নিজামউদ্দীন চৌধুরী) সাথে দেখা করবো।` তবে সেটা নিছক সৌজন্য সাক্ষাত নয়। আশরাফুল বোর্ড প্রধান নির্বাহীর কাছে জানতে চাইবেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে শেরে বাংলার ইনডোর, একাডেমিতে প্র্যাকটিস করা যাবে কিনা ?

তার কথা, ‘নিষিদ্ধ হবার পরও আমি ক্রিকেট ছাড়িনি। নিজ উদ্যোগে ফিটনেস ধরে রাখার কাজ এবং নিয়মিত ব্যাটিং-বোলিং করেছি। সেটা আমার বাসার কাছেই করেছি। এখন বিসিবির জিম, ইনডোর ও একাডেমি ব্যবহারের অনুমতি পেলে শেরে বাংলায় যাব। অনুশীলনটা আরও পরিপাটি হবে।’

এদিকে ১৩ আগষ্ট নিষেধাজ্ঞার খারা মুক্ত হলেও এখন পর্যন্ত বোর্ডের কারো ফোন পাননি আশরাফুল। বোর্ড পরিচালক, সিইও কেউ একবার হ্যালো করেননি।

তবে তাতে কোন আক্ষেপ নেই। আশরাফুলের কথা, `এ তিন বছর আমি নিজেই সবার থেকে দূরে ছিলাম। বলতে পারেন, চেনা জানা মানুষজনের কাছ থেকে নিজেকে সড়িয়ে রেখেছিলাম। ফোন নম্বরও পরিবর্তন করেছি। কাজেই আমার নাম্বারও কেউ জানেন না। তাই হয়ত কেউ কল দিতে পারেননি।`

তার সম সাময়ীক ক্রিকেটারদের কারো সাথেও তিন বছর কথা হয়নি। ক্রিকেট যাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেছে, সেই মাশরাফি, শাহরিয়ার নাফীস, আফতাব ও নাফীস ইকবাল কারো সঙ্গেই যোগাযোগ নেই। সবার সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। কাছের মানুষের কাছে আশরাফুল হয়ে উঠেছেন অপাংক্তেয়।

রাতারাতি কি আর সে চীনের প্রাচিরের মত বিশাল দেয়াল ভাঙ্গা সম্ভব? দেশের ক্রিকেট ও ক্রিকেট অঙ্গন তাকে কতটা আপন করে নেয়? মঙ্গলবার আশরাফুল শেরে বাংলায় পৌঁছানোর পর সে প্রশ্নের প্রাথমিক উত্তর মিলবে। দেখা যাক তার সম সাময়ীক ও অনুজপ্রতিম ক্রিকেটাররা তাকে কিভাবে নেন?

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

August 2016
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
Scroll To Top