নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন খালেদা জিয়া। গত ৫ জানুয়ারি থেকে ৯২ দিন পর্যন্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দেড় শতাধিক মানুষ হত্যা করেছেন। এতো মানুষ হত্যা করেও তার রক্ত পিপাসা মেটেনি। তিনি রক্তপিপাসু ডাইনির মতো হয়ে গেছেন।
শ্রমিক লীগের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত জাতীয় এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
টিআইবির প্রতিবেদনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা বলেছে সংসদ অকার্যকর। তারাতো বলবেই কারণ, সবক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য হয়েছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন ষড়যন্ত্র কোথা থেকে হচ্ছে। তারা ফরমূলা দিয়েছে একটি নির্বাচন দিলে আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে নাকি সংসদ কার্যকর হবে। কিন্তু বিএনপি বিরোধী দল থাকাকালে অশালীন ভাষা ও খিস্তিখেউর ছাড়া সংসদে কিছুই ছিল না। তাহলে টিআইবির মানদণ্ড কি ? আমি টিআইবির কর্মকর্তাদের বলতে চাই, এটা তাদের মন্তব্য নয়। তাদের প্রভূদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এমন মন্তব্য কিনা তা দেশবাসী জানতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘সরকারকে ব্যর্থ করার জন্যই দুই বিদেশি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। আর বিদেশি বন্ধুরাও রেড এলার্ট জারি করলেন। আমি বলব বাংলাদেশে কোনো আইএস ও জঙ্গি নেই। আমাদের ওপর জোর করে আইএস ও জঙ্গি ইস্যু চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ডে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা যে জবানবন্দি দিয়েছে, তাতে উঠে এসেছে যে, এক বড় ভাইয়ের নির্দেশে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। বাংলাদেশে আইএস সংগঠন আছে- এ ধরনের প্রচার দয়া করে আপনারা করবেন না। যা আছে তা বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে। যদি জঙ্গি খুজতে হয়, তাহলে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে খুজুন। দেশে যে ষড়যন্ত্র চলছে তার একটি প্রমাণ আশুরার রাতে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় গ্রেনেড হামলা। এ বোমা হামলা ছিল শেখ হাসিনার সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য।’
মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘ক্ষমতা হারানোর পর খালেদা জিয়ার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি ভেবেছেন মানুষ হত্যা করে আবারও ক্ষমতা দখল করবেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, ‘তিনি (নজরুল ইসলাম খান) বলেছেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। তাই আবার নতুন করে যুদ্ধে নেমেছি। নজরুল ইসলাম সাহেব, আমি আপনাকে জানিয়ে রাখি আপনার নেতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছেন। তাই আপনাদের নাম রাজাকারদের তালিকায় উঠে গেছে। বাংলাদেশে আর কোনো যুদ্ধে আপনাদের জয়লাভ করার সুযোগ নেই। জনগণ যতদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে ততদিন তাকে ক্ষমতা থেকে খালেদা জিয়ার কোনো প্রভূ নামাতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘মানুষের স্বপ্ন পূরণে শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। এটা তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আজকে অনেকেই নাখোশ। নাখোশতো হওয়ারই কথা। একসময় অনেক দেশ বাংলাদেশে ত্রাণ পাঠাতো। বলতো ভিক্ষুকের দেশ। তারাতো নাখোশ হবেই।’
জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, ‘জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভাকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য দলে দলে আপনারা আসবেন। জনসভাকে জনসমূদ্রে পরিণত করবেন।’
জাতীয় শ্রমিক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মো. সামসুল আলম বকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম।