Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
২০ দিন পর জানতে পারি মা-বাবা কেউ নেই : প্রধানমন্ত্রী

২০ দিন পর জানতে পারি মা-বাবা কেউ নেই : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্টের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর সে সময় বিদেশে অবস্থান করায় ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারি বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বেঁচে নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জার্মানি থেকে দিল্লি­ পৌঁছলাম ২৪ আগস্ট। ইন্দিরা গান্ধী বারবার খবর পাঠাচ্ছিলেন। তার সঙ্গে দেখা হলো ৪ সেপ্টেম্বর। তার মুখ থেকে শুনলাম কেউ বেঁচে নেই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ১৫ আগস্ট নিয়ে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ উল আলম লেনিন। এ ছাড়া সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ‘৩২ নম্বর মেঘের ওপারে’ শীর্ষক একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫’র এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মাত্র ১৫ দিন আগে ৩০ জুলাই জার্মানি যাই। ড. ওয়াজেদ ছাত্র ছিলেন। কিন্তু উনি চাচ্ছিলেন আমি সেখানে যাই। এক পর্যায়ে আব্বা নিজেই বলেছিলেন, আচ্ছা যাও। অনেকটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে দেশ ছাড়ি। রেহানাকেও সঙ্গে নিয়ে যাই। মা’ও আমার যাওয়ার সময় আকুল হয়ে কেঁদেছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি না, যাওয়ার দিন কেন আমার মা এভাবে কেঁদেছিলেন। মাকে আমি কখনো এভাবে কাঁদতে দেখিনি। আমার মা খুব চাপা স্বভাবের ছিলেন, তিনি কখনো তার অভাব অভিযোগের কথা বলতেন না। যাওয়ার সময় তাকে এভাবে আকুল হয়ে কাঁদতে দেখে বললাম, মা তুমি এভাবে কাঁদলে আমি যাবো না। আমি জানি না, তিনি কিছু বুঝতে পেরেছিলেন কি না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৩ অগাস্ট মা এবং বাবার সঙ্গে আমার নেদারল্যান্ড থেকে শেষ কথা হয়। এ সময় নেদারল্যান্ড কিভাবে নদী থেকে জমি উদ্ধার করছে (ল্যান্ড রিক্লেমেশন প্রজেক্ট) এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়।

মায়ের সঙ্গে সেদিন টেলিফোনে শেষ কথার সময়ও তাঁর মা বেগম মুজিব খুব কেঁদেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেদিনও তিনি খুব কেঁদেছিলেন। বলেছিলেন তুই আয়, তোর সঙ্গে অনেক কথা আছে। আর সে কথা হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আব্বা পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে দেখতে বলেছিলেন। জার্মানি পৌঁছে আমরা আব্বা-আম্মাকে চিঠি লিখতাম। রেহানা চিঠি লিখতে খুবই ভালোবাসতো। কিন্তু তাঁর শেষ চিঠিটা আর পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি। তাঁর আগেই সব শেষ হয়ে যায়।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল বক্তব্য রাখেন।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

August 2016
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
Scroll To Top