আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে বিধ্বংসী বিমান হামলার পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে একটি শিশু উদ্ধারের গা ছমছম একটি ফুটেজ প্রকাশ করেছে দেশটির বিরোধী কর্মীরা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, স্তব্ধ, ক্লান্ত ও রক্তাক্ত ছোট এক বালক অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে কমলা রংয়ের একটি চেয়ারে বিরক্তি নিয়ে বসে আছে। গাল বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে, শরীর ধুলায়
ধুসরিত।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের আলেপ্পোর ধংসস্তূপ থেকে ওই শিশুকে উদ্ধারের মর্মান্তিক একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার আলেপ্পোর চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির নাম ওমরান দাকনিশ; বয়স ৫ বছর। ওসামা আবু-এল ইজ নামের এক উদ্ধারকর্মী জানান, বুধবার রাতে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত কাতারজি জেলায় বিমান হামলার পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ওই শিশুটিকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে আসেন তিনি। তবে মস্তিকে কোনো আঘাত পায়নি ওসামা; পরে তাকে হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
আলেপ্পোর চিকিৎসকরা হাসপাতালটির নাম না বললেও এর কোড উল্লেখ করে বলছেন, হাসপাতালটি সরকারি বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ওসামা আবু-এল ইজ বলেছেন, এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে রোগী স্থানান্তরের কারণে অ্যাম্বুলেন্সও হামলার লক্ষ্য হচ্ছে। যে কারণে আমরা ভীত।
আলেপ্পো মিডিয়া সেন্টারের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে অন্ধকারাচ্ছন্ন ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে শিশুটিকে চেয়ারে বসিয়ে দেন। বিধ্বস্ত ওই শিশু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে গাল বেয়ে পড়তে থাকা রক্তে হাত স্পর্শের পর তা অ্যাম্বুলেন্সের চেয়ারে মোছে।
বিরোধীর কর্মীরা বলছেন, গত রাতের ওই হামলায় আটজন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচ শিশু রয়েছে।
কমলা রংয়ের চেয়ারে বসে থাকা ওমরানের রক্তাক্ত এই ছবি স্মরণ করিয়ে দেয় ইউরোপে যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত সিরীয় শিশু আয়লানের মুখ থুবড়ে পড়ে থাকার দৃশ্য। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে পালিয়ে তুরস্কে যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মারা যায় শিশু আয়লান। সেই সময় শিশু আয়লানের ছবি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তোলে। আয়লানের নিথর দেহের সেই ছবিকে বলা হচ্ছিল, বিশ্ব মানবতার মুখ থুবড়ে পড়ার প্রতীক।