স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর যানজট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন খোদ যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আমাদের এতো উন্নয়ন, এতো অগ্রগতির সাথে রাজধানী ঢাকাকে মেলানো যায় না। বিদেশিরা যখন এসে দীর্ঘ যানজটে পড়ে থাকেন তখন দেশের উন্নয়নের সাথে এই ঢাকা মেলে না। এজন্য অবৈধ ভাবে ফুটপাত ও রাস্তা দখল এবং অবৈধ যানবাহন চলাচলকে দায়ী করে মন্ত্রী রাজধানীর দুই মেয়রের উদ্দেশ্যে বলেন, বিড়াল মারতে হলে প্রথম রাতেই মারতে হবে। তা না হলে আর পারবেন না।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ইফাদ অটোস লি. এর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লাক্সারি এবং কর্পোরেট বাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু, ভারতের অশোক লেল্যান্ডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বালাচন্দ্রান ভেনকাট সুব্রামানিয়াম।
যোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আমরা যতই ফ্লাইওভার করি, মেট্রোরেল করি, এমআরটিএ করি কোন লাভ হবে না, যদি ফুটপাথ, সড়ক দখলমুক্ত করতে না পারি। এজন্য ঢাকার দুই মেয়রকে বলবো এখনই এগুলো পরিষ্কার করে দিন। বিড়াল মারতে হলে প্রথম রাতেই মারতে হবে। তা না হলে পরে ভোটের রাজনীতি চলে আসবে, তখন আর পারবেন না। সামনে জাতীয় নির্বাচন যখন হবে তখন এগুলো করতে গেলে ভোটের রাজনীতিতে সমস্যা হবে। এখন করতে গেলে কিছু জনগণ হৈ চৈ করবেই। এগুলো মাথায় নিয়েই কাজ করতে হবে। পরে দেখা যাবে যারা হৈ চৈ করেছে তারাই বলবে ভাল হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বন্দরনগরী চট্টগ্রামেরও একই অবস্থা। বিমানবন্দর থেকে আসতে গেলে রাস্তার বেহাল দশার কারণে কোমর ব্যথা হয়ে যায়।
মন্ত্রী বলেন, গণপরিবহনে বড় গাড়ি কমে গেছে। যেগুলো আছে সেগুলোকে আমি ‘ইগনর’ করি। বিশেষ করে ঈদের সময় যা অবস্থা তাতে গাড়ির দিকে তাকানোই যায় না।
তাই ইফাদ গ্রুপকে আগামী ২০১৬ সালের নভেম্বরের মধ্যে ১ হাজার ৫২ সিটের এসি ও নন এসি গাড়ি রাস্তায় নামানোর আহ্বান জানান তিনি। এ সময় ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মাথা নাড়িয়ে তার বক্তৃতাকে সমর্থন করেন।
মন্ত্রী বলেন, অশোক লেল্যান্ড ভালমানের গাড়ি আমাদেরকে দিয়েছে। বিআরটিসি’র বেশিরভাগ গাড়িই তো অশোক লেল্যান্ডের। চায়না থেকে আনা বিআরটিসি বাসগুলো তো ঝুলে ঝুলে পরছে। কে এনেছিলো নাম বলতে চাই না। তখন নিম্ন মানের গাড়ি আমদানি করা হয়েছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বের বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকা দ্বিতীয়। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, আমি যতই রাতে দিনে দৌড়াই কাজ না করলে মানুষ দাম দেবে না। মিষ্টি কথায় মন ভোলানো যাবে না, মানুষ কাজ চায়, কাজ দেখতে চায়।
‘‘ল মেকাররা ল ব্রেকার হলে কি কিছু করা যায়?’ প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, আমাদের ভিআইপিরা রাস্তার উল্টো সাইড দিয়ে হন হন করে গাড়ি চালিয়ে চলে যান। আর রাস্তায় রোগী, শিশু, স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে পরে থাকেন। তাদের কথা একবারও চিন্তা করেন না। শুধু তাদেরই কাজ থাকে অন্যদের কাজ থাকে না। এই অবস্থা হলে কোন ভাবেই যানজট কমানো যাবে না। যানজট কমাতে হলে সবাইকে আইন মানতে হবে।