Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
২০৫০ সাল পর্যন্ত চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকবে বাংলাদেশ

২০৫০ সাল পর্যন্ত চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকবে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের চাল খাওয়ার পরিমাণ কমছে। বাড়ছে মাছ, সবজি, আলু ও ফল খাওয়ার পরিমাণ। ২০২০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে ভাত খাওয়ার পরিমাণ আরো কমবে। ফলে বর্তমানে আমাদের যে পরিমাণ চাল উৎপাদিত হয় তার চেয়ে সামান্য পরিমাণ উৎপাদন বাড়ালেই ২০৫০ সালের মধ্যে আমাদের চালের চাহিদার কোনো ঘাটতি হবে না।

শনিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে আয়োজিত ‘এশিয়ার চাল উৎপাদন ও বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল জার্নালিস্টস অ্যান্ড অ্যাক্টিভিস্টস ফেডারেশন (বিএজেএএফ) এ সেমিনারের আয়োজন করে।

বিএজেএএফের সাংগঠনিক সম্পাদক সানোয়ার সাইদ শাহীনের সঞ্চালনায় সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ টেকনিক্যাল কর্মকর্তা সুভাস দাশগুপ্ত।

মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় সুভাস দাশগুপ্ত বলেছেন, ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের চাল উৎপাদন হবে চার কোটি ২৫ লাখ টন। আর ২০৫০ সালে হবে চার কোটি ৫৫ লাখ টন। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ মাথাপিছু ৪৩৮ গ্রাম করে চাল খায়। ২০৫০ সালে খাবে ৪০৫ গ্রাম করে। ফলে ওই সময়ে জনসংখ্যা ২০ কোটি হলেও চার কোটি ৫৫ লাখ টন চাল দিয়ে চাহিদা মেটানো যাবে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, সরকারকে সবসময় কৃষকের ফসলের দাম ও ভোক্তার কৃষিপণ্যের দামের মধ্যে সমন্বয় করতে হয়। এজন্য কৃষকের উৎপাদন খরচ কমানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সেটি করতে কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তি, যন্ত্রাংশ কৃষকের কাছে পৌঁছানো এবং গবেষণায় জোর দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করতে ভর্তুকি চালু রাখা হয়েছে।

সামনের দিনে কৃষি উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণে স্থানান্তর হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সে অনুসারে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ধান ছাড়াও ভবিষ্যতে ভুট্টার উৎপাদন এক কোটি টনে উন্নীত করা সম্ভব। এজন্য সব ধরনের প্রযুক্তি সাবধানতার সঙ্গেই বাস্তবায়ন করা হবে। কোনোভাবেই অ্যারিস্টক্র্যাটিক কনস্ট্রেইন্টকে বরদাশত করা হবে না।

মূল প্রবন্ধে আলোচনায় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. খান আহমেদ সাঈদ মুরশিদ বলেন, কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চালের দাম কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। কৃষিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, কৃষি খাতে গবেষণায় বিনিয়োগ ও বেসরকারি খাতের অংশীদারিত্ব বাড়াতে হবে। পাশাপাশি কৃষকের পণ্যের উৎপাদন খরচ কীভাবে কমানো যায় সে বিষয়গুলোতে আরো জোর দিতে হবে।

গবষেণার তথ্য উপস্থাপন করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আগামী ৩৪ বছরে আমাদের ধানের উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। তবে বর্তমান উৎপাদনকে ধরে রাখতে অবশ্যই জমি সংকট ও দাম নিশ্চিত করতে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সবুজ বিপ্লবের পাশাপাশি গ্রিন ইকোনমি এবং ব্লু ইকোনমিতে জোর দিতে হবে।

এ ধরনের আয়োজন সাংবাদিকতার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে জানিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, এজন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের তথ্য সরবরাহ ও মতামতে আরো সহায়ক ভূমিকা নিতে হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তন কৃষির জন্য সবচেয়ে বড় বাধা। এজন্য ঘাতসহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন ও কৃষকের কাছে দ্রুত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

বিএজেএএফ’র সভাপতি অমিয় ঘটক পুলকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ড. শমসের আলী, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) মহাপরিচালক ড. ভাগ্য রানী বণিক, এসিআই লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ড. ফা হ আনসারী, লাল তীর সিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব আনাম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের এফএও পরিচালিত ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব এগ্রিকালচারাল জার্নালিস্টস (আইএফএজে) এর বাংলাদেশ শাখা হলো বিএজেএএফ।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

August 2016
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
Scroll To Top