নিজস্ব প্রতিবেদক :
বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, নদীর নাব্যতা রক্ষা ও নৌপথে ডাকাতি বন্ধসহ ১৫ দফা দাবিতে `নৌ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ` এর ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে মংলা সমুদ্র বন্দর ও খুলনা নৌ-বন্দর। সোমবার রাত ১২টার পর থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়।
ধর্মঘটের ফলে মংলা সমুদ্র বন্দর, খুলনা নৌ-বন্দরে পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্দরে পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহন হচ্ছে না। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারী, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম-মহাসচিব ও মংলা বন্দর আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম মাস্টার বলেন, ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার মধ্যরাত থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। তবে তেলবাহী ট্যাঙ্কার এ ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকবে। নৌ-শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ট্যাঙ্কার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করায় তারা ধর্মঘটে যাচ্ছেন না।
কর্মবিরতি ফলে মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এ বন্দরে অবস্থানরত বাণিজ্যিক জাহাজের খালাস-বোঝাইয়ের কাজ হচ্ছে না। নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে বন্দর চ্যানেলে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় থাকা মাদার ভ্যাসেলগুলো চ্যানেলে পড়ে রয়েছে। অলস সময় পার করছেন নৌযান শ্রমিকরা।
শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আবুল কাশেম মাস্টার জানান, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, নৌপথে চুরি-ডাকাতি বন্ধ ও নদী খননসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ের জন্য এ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার মধ্যরাত থেকে সারাদেশের প্রায় ১২ হাজার নৌযানের (কার্গো, কোস্টার, বার্জ) শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি ও ধর্মঘট পালন করছেন।
বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও ধর্মঘটের কারণে মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে অবস্থানরত ১২টি দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্যবোঝাই-খালাস ও পরিবহন কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে বন্দর জেটিতে অবস্থানরত জাহাজ থেকে পণ্য বোঝাই খালাস ও সড়ক পথে পণ্য পরিবহন চলছে স্বাভাবিক গতিতে।
এদিকে, ধর্মঘটের কারণে মংলায় অবস্থানরত সকল নৌযান নোঙর করে অলসভাবে বসে থাকার ফলে মংলা বন্দর থেকে নৌপথে সারাদেশে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়বেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন খুলনা জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, কেন্দ্রের ডাকা ধর্মঘট খুলনা ও মংলায় সর্বাত্মকভাবে পালিত হচ্ছে।
খুলনা বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন মালিক গ্রুপ ও মংলা বন্দর ব্যবহারকারী সমন্বয় কমিটির মহাসচিব অ্যাড. সাইফুল ইসলাম বলেন, নিয়মানুসারে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের পক্ষে নৌ-পরিবহন মালিকরা। কিন্তু কোনও অযৌক্তিক ও অন্যায় দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয়। শ্রমিকদের নতুন দাবিতে অস্বাভাবিক হারে বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।