Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
‘সমালোচনায় আপত্তি নেই, কিন্তু গঠনমূলক হতে হবে’

‘সমালোচনায় আপত্তি নেই, কিন্তু গঠনমূলক হতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক :  

গণমাধ্যমে কখনও কখনও সরকারের অন্যায্য সমালোচনা হয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সরকারের যেহেতু কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নেই বলে সরকার এসব সমালোচনাকে পাত্তা না দিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুঃস্থ, অস্বচ্ছল, দুর্ঘটনাকবলিত এবং নিহত সাংবাদিকদের স্বজনদের হাতে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১০৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। কিন্তু সেগুলোর অনেক সমালোচনা হয়েছে। অনেকে অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু নিজের চিন্তা যদি পরিষ্কার থাকে তাহলে কে কী বললেন, কী লিখলেন তাতে কিছু যায় আসে না। আমার আত্মবিশ্বাস আছে। আজ  সবাই সে সুফল ভোগ করছে।’

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স দেয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি টিভি দিলাম, বিদ্যুৎ দিলাম, আর আমার সমালোচনাই হয়। বাঙালি বেশি কথা বলতে পছন্দ করে। পরনিন্দা করতে পছন্দ করে। ঠিক আছে করুক। আমি যদি ঠিক থাকি তাহলে এসব সমালোচনায় কিছু যায় আসে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়েও মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। এখানেও আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমরা নিজের টাকায় সেতু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই গঠনমূলক সাংবাদিকতার চর্চা হোক। আপনারা সমালোচনা করুন আপত্তি নেই। কিন্তু সেটা গঠনমূলক হতে হবে। কেউ ভুল করলে যেন সংশোধন হতে পারে। কিন্তু যেন কেবল সমালোচনার জন্য সমালোচনা যেন না হয়।’

‘স্বাধীনতা কেবল ভোগ নয়, দায়িত্ব পালনও’

সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদেরও দায়িত্বশীলতার পরিচয়ও দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা ভালো, সেটা ভোগ করতে হলে দায়িত্বও পালন করতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম মাঝেমধ্যে কিছু ঘটনা ঘটায়, তাতে আমাদের ভুগতে হয়। হলি আর্টিজানে হামলার পর অপারেশনের জন্য যে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তার সবই টেলিভিশনে বলে দেয়া হলো। এতে হামলাকরারীরাও সেসব তথ্য জেনে গেছে’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পদক্ষেপ নেয়ার পর সেগুলো যদি সম্প্রচার করেন, তাহলে তারাও তা জেনে যাবে। কিছু ঘটলেই ছুটে যাওয়া আর সরাসরি সম্প্রচারের নামে মানুষের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করা-দয়া করে এটা করবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপারেশনে গেলে আপনারা যদি তা সব দেখিয়ে দেন তাহলে জঙ্গিরাও তো ব্যবস্থা নিয়ে নেয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টেলিভিশনে লাশের ছবি, বিভৎস ছবি, রক্তমাখা ছবি দেখানো হয়। আমেরিকায় তো গত কয়েকদিনে কত ঘটনা ঘটলো, বাংলাদেশি ইমামকে হত্যাও করা হলো, একটা রক্তাক্ত ছবি দেখেছেন? আমাদের এখানে কেন এগুলো দেখানো হয়? এমন ছবি তো শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব বিষয়ে নীতিমালা করতে হবে।’

অনলাইন নিউজপোর্টালের দায়বদ্ধতা নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘এর একটি নীতিমালা করতে হবে। সেখানে কী কী দেয়া যাবে তা ঠিক করতে হবে। অশ্লীলতা যেন প্রচার না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।’

সাংবাদিক হত্যার বিচার প্রসঙ্গ

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিচারের বিষয়টি তুলে ধরেন সাংবাদিক নেতারা। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বলেন, ‘অনেক সময় মামলা হয়, সাক্ষী পাওয়া যায় না। তারপরও বিচার আমরা করবো। এরই মধ্যে একজন হত্যার বিচার হয়েছে। অন্য হত্যারও বিচার হবে। আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমিও আমার পিতা, মাতা, ভাইকে হারিয়েছি। তাদের বিচারের জন্য ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর ক্ষমতায় এসে বিএনপি সারাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাংবাদিকদের ওপরও ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক, লেখক, শিক্ষক কেউ বাদ যায়নি তাদের অত্যাচার থেকে। সেসব সংবাদ কেউ প্রচার করতে পারেনি। একটা মাত্র পত্রিকা জনকণ্ঠই কিছু খবর দিতো। যারা এখন নিজেদেরকে স্বাধীন ভাবেন নিজেদের তারাও কিছু প্রচার করতে পারেননি।’

নবম ওয়েজবোর্ড ‘আসছে’

সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের বেতন ভাতার নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করতে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন,‘সাংবাদিকরা যেন সুবিধা পায় মালিকরা সেটা দেখবেন। অনেকে আমার মালিক ও সাংবাদিক দুই পরিচয়ই ধারণ করে আছেন’।

সাংবাদিকদের আবাসন সংকট সমাধানে ভবন নির্মাণে জমি দেখতে সাংবাদিক নেতাদেরকে বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আপনারা জায়গা দেখুন, সবাই একটা করে প্লট না নিয়ে কয়েকজনে মিলে যেন একটা নিতে পারেন সে ব্যবস্থা করা যায়।’

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে সহায়তা দিতে স্বচ্ছল সাংবাদিক নেতাদেরকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। জানান ইকবাল সোবহান চৌধুরী এরই মধ্যে ১০ লাখ টাকা দিয়েছেন এই ট্রাস্টে। বলেন, ‘অনেকে সম্পদশালী, এখানেও উপস্থিত আছেন তারা। এই পরিমাণ টাকা দেয়া তাদের জন্য কোনো ব্যাপার না। এর পাশে একটি শূন্য বসিয়েও অনেকে তা দিতে পারেন।’

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

August 2016
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
Scroll To Top