Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
সংবিধান রক্ষার শপথ ভেঙেছেন দুই মন্ত্রী : আদালতের পর্যবেক্ষণ

সংবিধান রক্ষার শপথ ভেঙেছেন দুই মন্ত্রী : আদালতের পর্যবেক্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :  

যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায়ের আগে সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে আদালত অবমাননায় দায়ে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়ে যে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ, বৃহস্পতিবার তার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

আর রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলছেন, সংবিধান রক্ষার যে শপথ দুই মন্ত্রী  নিয়েছিলেন তারা তা ভঙ্গ করেছেন।

পর্যবেক্ষণে বলে হয়েছে, সংবিধানে থাকা দায়িত্ব (তারা) দুই মন্ত্রী অবহেলা করে পালন করেছেন। একই সঙ্গে সংবিধান রক্ষার্থে তারা শপথ নিয়েছিল, সেই শপথ ভঙ্গ করেছেন। বিচার বিভাগকে ছোট করেছেন।

দুই মন্ত্রী অপরাধ করেছেন এ বিষয়ে বিচারপতিদের সবাই একমত পোষণ করলেও তারা শপথ ভঙ্গ করেছেন সে মত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতি। অন্য বিচারপতিরা হলেন-  বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা, নাজমুন আরা সুলতানা, ইমান আলী, মির্জা হোসেনইন হায়দার।

অপরদিকে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন তিনজন। তারা হলেন- সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও নিজামুল হক নাসিম।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায়ের আগে সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য দুই মন্ত্রীকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে আট সদস্যের আপিল বেঞ্চ।

গত ২৭ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে সাত দিনের মধ্যে ওই অর্থ ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

আইনজীবীদের এক পক্ষ বলছেন, এই রায়ের কারণে দুই মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব না থাকার কোনো বিধান সংবিধানে নেই। অন্য পক্ষের দাবি, ‘শপথ ভঙ্গের’ কারণে তারা মন্ত্রী থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।

তবে তারা অপরাধ করেছেন এ বিষয়ে একমত হয়েছেন সবাই।

গত ৫ মার্চ ঢাকায় ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির এক গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় কামরুল ও মোজাম্মেল এক সুরে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সমালোচনা করেছিলেন।

এরপর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তাদের প্রতি আদালত অবমাননার রুল জারি করেন।

রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, ‘আমরা উচ্চ আদালতের বিচারকরা সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করেছি। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে জনকণ্ঠের রিপোর্টে যাদের নাম আসছে সবাইকে প্রসিডিং ড্র করিনি। একটাই কারণ, আমরা প্রকৃতপক্ষে কনটেম্পট নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চাইনি। এটা হলে আমরা বিচার প্রশাসন পরিচালনা করতে পারবো না। আমরা শুধু দুইজন মন্ত্রীর প্রতি কনটেম্পট প্রসিডিং ড্র করেছি। সারা জাতিকে একটি মেসেজ দেওয়া, বিচার প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া যে কেউ যদি এর পুনরাবৃত্তি করে আমরা কত কঠোর হতে পারি।’

দুই মন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে আদালতে আবেদন করার পর গত ২০ মার্চ শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, দুই মন্ত্রীর বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ। তারা সর্বোচ্চ আদালতের অবমাননা করেছেন। সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে তা ভঙ্গের পরিণাম কী হওয়া উচিৎ- তাও তিনি জানতে চেয়েছিলেন দুই মন্ত্রীর আইনজীবীদের কাছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

September 2016
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Scroll To Top