নিজস্ব প্রতিবেদক :
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর পরিবারের সদস্যদের ডেকেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
আইনি সব লড়াই চালিয়ে পরাজিত হওয়ার পর কাসেম আলীর সঙ্গে খোলা ছিল কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ। তবে শুক্রবার তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন না তিনি। এরফলে কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারা কর্তৃপক্ষ চাইলে যেকোন সময় তার ফাঁসি কার্যকর করতে পারে।
যেকোনো আসামির ফাঁসি কার্যকরের আগে তাকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেষ দেখা করতে দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এরআগে যুদ্ধাপরাধের অপরাধে দণ্ডিত বাকিরাও একই সুযোগ পেয়েছেন।
মীর কাসেমের পরিবারকে কারা কর্তৃপক্ষের ডাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া। তিনি বলেছেন, বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে তাদের দেখা করতে বলা হয়েছে।
সে অনুযায়ী পরিবারের ২২-২৩ সদস্য কাশিমপুরে কারাগারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন সুমাইয়া।
এদিকে মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকরে দু’দফা মহড়াও হয়ে গেছে কাশিমপুর কারাগারে।
কড়া নিরাপত্তা কাশিমপুরে
এদিকে রায় কার্যকর করাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা কাশিমপুর কারাগারের সড়কে এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। সেই সঙ্গে রয়েছে কমিউিনিটি পুলিশের সদস্যরা।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, শুধু কাশিমপুর এলাকা নয়, নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরো গাজীপুর জেলায় নেয়া হয়েছে। এজন্য টঙ্গী, স্টেশন রোড, বোর্ড বাজার, ভোগড়া বাইপাস মোড়, চান্দনা চৌরাস্তা, গাজীপুর শহর, রাজেন্দ্রপুর, কোনাবাড়ি, চন্দ্রা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এসব এলাকায় সর্বাত্মক সতর্কতা বজায় রাখার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রায়কে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কাশিমপুর কারাগারের সামনে মূল কারা ফটকে বাড়ানো হয়েছে অতিরিক্ত কারারক্ষীর সংখ্যা।
কাশিমপুর কারাগারে প্রবেশের প্রধান সড়কের সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে কারাগারের প্রধান ফটক পর্যন্ত সড়কের ৫টি স্থানে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা এসব চৌকিতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি অবস্থান নিয়েছেন র্যাব সদস্যরা। তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চৌকিগুলো পার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
কারাগারের মূল ফটক থেকে অন্তত ২০০ গজ দূরে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য স্থান করে দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সকাল থেকে বিপুল সংখ্যক গণমাধ্যম কর্মী কারাগারের সামনে গিয়ে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।