স্পোর্টস ডেস্ক :
শিষ্যদের প্রায় সবার নামই কম-বেশি জানা। তবুও পরিচয় পর্বটা সকালেই সেরে নিলেন কোর্টনি ওয়ালশ। অনেককেই তিনি ডাক নামে ডেকে অবাক করে দিলেন।
ছোটবেলার স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে হাত মেলালেন দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা। টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমতো হাত মেলানোর সময় যতটা না ওয়ালশের দিকে তাকাচ্ছিলেন তার চেয়ে বেশি আকাশ দেখছিলেন। প্রায় সবার একই অবস্থা ছয় ফুট সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি লম্বা লোকটাকে দেখতে যেন আকাশের দিকেই তাকাতে হয়।
বাংলাদেশের বোলারদের জন্য অনেকেরই স্বপ্নের নায়ক ক্যারিবীয় এই পেসার। তাই প্রথম দেখাটা কাটে মুগ্ধতায়।
দলের তরুণ পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি থেকে শুরু করে রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম সবাই অন্যরকম এক মুগ্ধতা নিয়ে শেষ করেন ওয়ালশের সঙ্গে প্রথমদিন।
রাব্বি বলেন, ‘তিনি একজন লিজেন্ড বোলার। খুবই ভালো লাগছিল তার মতো একজন কোচকে কাছে পেয়ে।’ রুবেল বলেন, ‘এর আগে এত বড় মাপের কোনো বোলারের সঙ্গে কাজ করিনি। তার সঙ্গে কাজ করার অনুভূতি অন্যরকম। শফিউলতো তার দেহের বিশালতা নিয়ে মুগ্ধ। তিনি বলেন, ‘সত্যি এত বড় মাপের বোলারের সঙ্গে কাজ করবো ভাবিনি। এমনকি তার মতো এত লম্বা কোনো বোলারের সঙ্গেও আগে কাজ করিনি।’
প্রথমদিন বলে খুব একটা চাপ দিয়ে বা তোড়জোড় করেননি কোর্টনি ওয়ালশ। তবে একেবারেই যে কিছু করেননি তা নয়, শুরুতেই তিনি দেখে নিতে চেয়েছেন কে কেমন বল করেন। বিশেষ করে ইয়র্কার, লেন্থ নিয়ে কথা বলেছেন।
রাব্বি বলেন, ‘খুব বেশি একটা কিছু করেননি। আমাকে দুই-একটা বল করতে বলেছেন। আমি করেছি।’ শফিউল বলেন, ‘তেমন কোনো মিটিংই করেননি।’ রুবেল বলেন, ‘প্রথম দিনতো তাই মনে হয় খুব বড় কিছু নিয়ে কাজ করেননি।’ আজ টাইগারদের শেষ অনুশীলন ম্যাচ। ম্যাচের আগে তিনি সবাইকে হালকা মেজাজে থাকতে বলেছেন। ম্যাচ নিয়ে ভাবতে বলেছেন।
রাব্বি বলেন, ‘আমার যেটা মনে হয় কাল (আজ) যেহেতু আমাদের ম্যাচ আছে তাই ম্যাচের আগে আমাদেরকে তিনি চাপ দিতে চাননি। বারবার বলেছেন কাল (আজ) ম্যাচ, তোমরা সেদিকেই মন দাও।’
কোর্টনি ওয়ালশ অনেক বড় এক নাম- তাই ক্রিকেটারদের একটু ভয়ও ছিল। কেমন হবেন, কতটা গম্ভীর হবেন। কড়া আচরণ হবে কি না! কিন্তু মাঠে এসে ক্রিকেটারদের সেই ভয় অনেকটাই দূর করে দিয়েছেন কোর্টনি।
প্রথমদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে রাব্বি বলেন, ‘আমি যখন বল করছিলাম তখন তিনি হাততালি দিচ্ছিলেন। বললেন ভালো হয়েছে। আমাকে র্যাব বলে ডাকছিলেন। উৎসাহ দিচ্ছিলেন সবাইকে। এটাই প্রয়োজন। একজন কোচ যখন মাঠে থাকবেন তখন তিনি যেন ক্রিকেটারদের উৎসাহ দেন। ভালো হলে প্রশংসা করেন। আবার খারাপ হলে দেখছিলাম চুপ করে থাকেননি। ভুলটা উৎসাহ দিয়ে শুধরে দিচ্ছিলেন। বলছি পা টা এইভাবে ফেল, হাতটা এই ভাবে হবে। আমি মনে করি কোচরা যখন এইভাবে ক্রিকেটারদের পাশে থাকেন তখন ক্রিকেটারও নিজের সেরাটা দিতে পারে। যতটা কঠিন মনে হয়েছিল তিনি আসলে তেমন নন। তিনি আমাদের ভালো বন্ধু হয়ে উঠবেন।’
ওয়ালশের কোচিং অভিজ্ঞতা নেই। তাই কিছুটা হলেও গুঞ্জন আছে পারবেন তো তিনি? রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম রাব্বিরা মনে করেন ওযালশের মতো একজন কোচের মাঠে উপস্থিত থাকাটাই অনেক বড় কিছু। রাব্বি বলেন, ‘আসলে তার মতো একজন কোচ যখন মাঠে থাকেন- সেটাই অনেক বড় বিষয়। কারণ তিনি অনেক দেশে অনেক ম্যাচ খেলেছেন। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুসারে বোলারকে কিভাবে উৎসাহ দিতে হবে, কিভাবে চাঙ্গা করতে হবে- তা তার ভাল করেই জানা। এটি আমাদের সবচেয়ে বেশি উপকারে দিবে।’