Monday , 23 December 2024
নিউজ টপ লাইন
বালুর আগ্রাসনে বিপন্ন হচ্ছে সীমান্তের কৃষিজমি

বালুর আগ্রাসনে বিপন্ন হচ্ছে সীমান্তের কৃষিজমি

নিজস্ব প্রতিবেদক :  

উজান থেকে ঢলের সঙ্গে নেমে আসা বালুর আগ্রাসনে বিপন্ন হচ্ছে সুনামগঞ্জ সীমান্তের কৃষিজমি। সামান্য বৃষ্টিতে সীমান্তের ওপার থেকে পাহাড়ি ঝরনা দিয়ে পানির সঙ্গে নেমে আসা বালু ছড়িয়ে পড়ছে এপারের কৃষিজমিতে।

দিন দিন এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বালুর আস্তরণে উর্বরতা হারাচ্ছে এসব কৃষিজমি। এক সময় যেখানে ছিল আবাদি কৃষিজমি ও বিশাল পুকুর-খাল সেগুলো বালু পড়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। একমাত্র ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে সেখানকার কৃষক।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এখন পরিবার চালাতে দিনমজুর, বারকি শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছেন। বালুর আগ্রাসনের শিকার জেলার প্রায় এক হাজার ৫০০ একর জমি। তবে কৃষকরা কৃষি অফিসের এ দাবি মানতে নারাজ। তাদের দাবি, পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি। কৃষকদের অভিযোগ, সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই কৃষি অফিসের।

সুনামগঞ্জ জেলা সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা ভারত সীমান্তঘেঁষা। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া-জৈয়ন্তিকা পাহাড়ের পাদদেশে এ পাঁচটি উপজলার কয়েক হাজার একর চাষযোগ্য কৃষিজমি রয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পাঁচটি উপজেলার সীমান্তঘেঁষা প্রতিটি গ্রামের চিত্র প্রায় একই ধরনের। অধিকাংশ কৃষিজমির ওপর ৩/৪ ফুট বালুর আস্তরণের কারণে ফসল ফলানো যাচ্ছে না জমিতে। এতে কৃষক পরিবারে নেমে এসেছে দুর্দশা। একমাত্র ফসলি জমি হারিয়ে দিশেহারা কৃষকদের জীবন সংগ্রাম চলছে অর্ধাহারে-অনাহারে।

তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তঘেঁষা রজনীলাইন গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার, সিদ্দিক মিয়াসহ অনেকেই জানান, বালু আগ্রাসনের সমস্যা বহু দিনের। তবে ২০০৫ সাল থেকে প্রকট আকার ধারণ করেছে। তারা জানিয়েছেন, পাহাড়ে ঘন ঘন বৃষ্টি হওয়ায় বিশেষ করে বর্ষাকালে বালুর সঙ্গে বড় বড় পাথরও নেমে আসে। শুধু যে কৃষিজমি তা নয়, এ আগ্রাসনের শিকার বসতবাড়ি, স্কুল, বাজার ও স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প।

বালুর কারণে বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এলাকা। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে সরকার এগিয়ে আসবে এমন প্রতীক্ষার প্রহর গুণছে সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।

Bali

একই গ্রামের মোকাবর হোসেন জানান, তার দুই বিঘা জমিতে প্রায় চার ফুট বালুর আস্তরণ পড়েছে। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, যে জমিতে এক সময় ধান, আলুসহ বিভিন্ন মৌসুমি সবজি রোপণ করে সংসার চলতো, এখন চাষযোগ্য না হওয়ায় তা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জাহেদুল হক জানান, পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে পারলে বালুর আগ্রাসন থেকে কৃষিজমি রক্ষা করা যাবে। কেবল কৃষি বিভাগ নয়, সরকারের সবাইকে নিয়ে এ সমস্যা সমাধান করতে হবে। যেসব জমিতে বালু পড়েছে, সেখানে বাদাম ও মিষ্টি আলু চাষের পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

সর্বশেষ নিউজ

ফেসবুক পেইজ The Daily Neighbour

ডেইলি নেইবার আর্কাইভ

September 2016
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Scroll To Top