আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
শেষ পর্যন্ত উগ্র তাকফিরি জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসআইএল বা দায়েশের হাত থেকে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় মসুল শহর মুক্ত করার অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-এবাদি আজ (সোমবার) ভোর রাতে এ অভিযান শুরুর কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন।
ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরী সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য গত কয়েক মাস ধরে প্রস্তুতি চলছিল। ২০১৪ সালের জুন মাসে দায়েশের হাতে নগরীটির পতন হয়।
প্রধানমন্ত্রী এবাদি রোববার রাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে ঘোষণা করেন, “বিজয়ের মুহূর্ত অত্যাসন্ন এবং মসুল মুক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে।” তিনি আরো বলেন, “আজ আমি দায়েশের সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ থেকে আপনাদের মুক্ত করার অভিযান শুরু করার কথা ঘোষণা করছি।” ইরাকি প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অভিযানে নেতৃত্ব দেবে সাহসী ইরাকি সেনাবাহিনী ও জাতীয় পুলিশ। তারা ছাড়া আর কেউ মসুলে প্রবেশ করবে না।”
এর আগেও প্রধানমন্ত্রী এবাদি একাধিকবার বলেছেন, মসুল পুনরুদ্ধার অভিযানে শুধুমাত্র ইরাকি সৈন্য অংশ নেবে এবং কোনো বিদেশি সেনা সেখানে থাকবে না। তিনি আরো বলেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন সেনারা শুধুমাত্র অভিযানকে পৃষ্ঠপোষকতা দেবে।
ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় নেইনাভা প্রদেশের রাজধানী মসুল পুনর্দখলের ক্ষেত্র সৃষ্টির জন্য গত আগেস্ট নগরী থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত কৌশলগত কাইয়ারা শহর দখল করে সরকারি বাহিনী। ইরাকে সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হায়দার ফাজলি বলেছেন, মসুল পুনরুদ্ধারের অভিযানে অন্তত ২৫,০০০ সৈন্য অংশ নিচ্ছে।
ইরাকে মসুল হচ্ছে দায়েশের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি। এই নগরী দখলের পরই দায়েশের প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি ‘খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিল। কর্মকর্তারা বলছেন, এ শহরটি পুনর্দখল করা সম্ভব হলে ইরাকে দায়েশের মৃত্যু ঘটবে।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে আরো বলেন, “ইনশা আল্লাহ দায়েশের হাত থেকে আপনাদের মুক্তি উদযাপন করতে আমরা শিগগিরই মসুলে মিলিত হবো। সব ধর্মের মানুষ মিলে দায়েশকে পরাজিত করে আমরা প্রিয় শহর মসুলের পুনর্গঠন করবো।”