আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের হাত থেকে ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুল উদ্ধারের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত অভিযান ভালোভাবে এগিয়ে চলেছে। এরইমধ্যে অভিযান তৃতীয় দিনে পড়েছে। ইরাকের জয়েন্ট অপারেশন কমান্ড জানিয়েছে, মসুলের বারতালাহ এলাকায় ইরাকি বিমান বাহিনীর হামলায় নেইনাভা প্রদেশের দায়েশের স্বঘোষিত গর্ভনর ওয়ায়েদ ইউনুস নিহত হয়েছে।
এ হামলায় আরো অন্তত ৩২ সন্ত্রাসী মারা গেছে। এছাড়া, হামাদানিয়া এলাকায় বিমান হামলায় মারা গেছে ২৫ দায়েশ সন্ত্রাসী। এরইমধ্যে হামাদানিয়া এলাকা ইরাকি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে সেখান থেকে অনেক সন্ত্রাসী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। ওই এলাকায় দায়েশের গোপন সুড়ঙ্গ পথের একটি নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, হামাদানিয়ায় সামরিক অভিযানের ভেতরেই দায়েশ সন্ত্রাসীরা দুটি গাড়িবোমা হামলা চালিয়েছে। সেখানে আজ আরো পরে পদাতিক বাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া, আজ দিনের শুরুতেই মসুলের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। তবে ইরাকের স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী হাশেদ আশ-শাবি মসুল শহরের ভেতরে অভিযানে অংশ নেবে না বলে ঘোষণা করেছে। তারা শহরের পশ্চিম অংশে অবস্থান করবে যাতে সম্ভাব্য বিদেশী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা যায়। সেক্ষেত্রে মসুল শহরের ভেতরের অভিযানে শুধুমাত্র ইরাকি সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেবে।
ইরাকের কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনীর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রায়েদ শাকের জাওদাত জানিয়েছেন, মসুল অভিযান শুরু পর এ পর্যন্ত ৩৫২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা দায়েশমুক্ত করা হয়েছে।
মুসল শহরের দক্ষিণ-পূর্বে কারাকুশ শহরটি মুক্ত করার পর সেখানকার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ স্থানীয় একটি গির্জায় জড়ো হয়ে ব্যাপক আনন্দ প্রকাশ করেছে। দু বছর আগে শহরটি দায়েশ দখল করার পর এসব খ্রিস্টান ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
এদিকে, মসুল থেকে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে তার দায় মার্কিন বিমান বাহিনীকে নিতে হবে বলে সতর্ক করেছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-এবাদি। তিনি বলেছেন, ইরাকি বাহিনীকে মার্কিন বিমান বাহিনী যেহেতু সমর্থন দিচ্ছে সে কারণে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে তার দায়ভার তাদের ওপর বর্তাবে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও গতকাল বলেছেন, ইরাক থেকে সিরিয়ায় নিরাপদে দায়েশ সন্ত্রাসীদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিলে মস্কো উপযুক্ত রাজনৈতিক ও সামরিক সিদ্ধান্ত নেবে। অন্যদিকে, আমেরিকা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, মসুল অভিযানের সময় দায়েশ রাসায়নিক হামলা চালাতে পারে।