নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের অভ্যন্তরীণ রুটের পর এবার আন্তর্জাতিক রুটেও উন্নত যাত্রীসেবার মাধ্যমে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে যাচ্ছে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো। যদিও সরকারের কাছ থেকে সরকারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তুলনায় খুবই কম সুবিধা পায় দেশের সবকটি বেসরকারি এয়ারলাইন্স।
তাদের অভিযোগ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে এখনো কোন বেসরকারি এয়ারলাইন্সকে এয়ারক্র্যাফট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হ্যাঙারের ব্যবস্থা করেনি বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচক অথচ ফ্লাইং ক্লাবসহ সব হেলিকপ্টার কোম্পানিকে হ্যাঙার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বেবিচক সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দরে বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাব, অ্যারো টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেড, সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস লিমিটেড, ম্যাবস এয়ার সাপোর্ট (বাংলাদেশ), ইয়াং ওয়াং এয়ারলাইনস, বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস, স্কয়ার এয়ার লিমিটেড, জয়নুল হক সিকদার উইমেনস মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল (প্রা.) লিমিটেড ও মেঘনা এভিয়েশন লিমিটেডের হ্যাঙার রয়েছে।
বেবিচক থেকে হ্যাঙার নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাব ৬১ হাজার ৭৭৫ বর্গফুট জায়গা ইজারা নিয়েছে। এর মধ্যে বিমানবন্দরের ভেতরে ৩৫ হাজার ও বাইরে ২৬ হাজার ৭৭৫ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। এছাড়া অ্যারো টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেডকে ৬ হাজার বর্গফুট, সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস লিমিটেড ৬ হাজার ৬৯২, ম্যাবস এয়ার সাপোর্ট (বাংলাদেশ) ৯ হাজার ৭৩৭, ইয়াং ওয়াং এয়ারলাইনস ২২ হাজার ৫০০, বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস ৩০ হাজার, স্কয়ার এয়ার লিমিটেড ১০ হাজার ১২৫, জয়নুল হক সিকদার উইমেনস মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল (প্রা.) লিমিটেড ৪৩ হাজার ৫৬০ ও মেঘনা এভিয়েশন লিমিটেডকে ২৮ হাজার ৯০৮ বর্গফুট জায়গা ইজারা দিয়েছে বেবিচক।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তা জানান, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ইতোমধ্যে একটি সুপরিসর বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাপ্ট এয়ারলাইন্সটির বহরে যুক্ত করেছে। আগামী মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) আরো দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাপ্ট এয়ারলাইন্সটির বহরে যুক্ত করবে। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, তারপরও আমাদের জন্য হ্যাঙার নেই।
অত্যাধুনিক এই এয়ারক্র্যাফট দিয়ে কলকাতা, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, মাস্কাট, দোহা, গুয়াংজো, কুনমিংসহ আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ২০১৪ সালে দুটি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্র্যাফট নিয়ে বাংলাদেশের আকাশপথে যাত্রা শুরু করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
পরে সংযোজন ঘটে আরো একটি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্র্যাফটের। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রায় একসঙ্গে তিনটি বোয়িংয়ের যাত্রাকে দিগন্ত জয়ের স্বপ্ন পুরণ বলে আখ্যায়িত করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, বেসরকারি এয়ারলাইন্স হিসেবে এভিয়েশন সেক্টরকে আমরা সচেষ্ট। নতুন প্রজন্মের বোয়িং যুক্ত হলেও আমাদের কোনো হ্যাঙার বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ঢাকা বা ঢাকার বাইরে বেসরকারি এয়ারলাইনন্সগুলোকে হ্যাঙার স্থাপনের অনুমতি দেয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।
যদিও এ বিষয়ে বেবিচকের সদস্য (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং) এয়ার কমোডর মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, শাহজালালে থার্ড টার্মিনাল নির্মানকাজ শুরুর আগে হ্যাঙারসহ অনেক স্থাপনাই সরাতে হবে। তখন হেলিকপ্টার কোম্পানিগুলোর ইজারা বাতিল করা হবে। আর বেসরকারি এয়ালাইন্সগুলোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে হ্যাঙারের জন্য ইজারা নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো চার্টার হেলিকপ্টার ব্যবসা পরিচালনা করছে। এর মধ্যে সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন আরএনআর এয়ারলাইনসে তিনটি হেলিকপ্টার রয়েছে।
এগুলো হলো, বেল-৪০৪, আর-৬৬ ও আর-৪৪ হেলিকপ্টার। পাশাপাশি আরো দুটি আর-৬৬ হেলিকপ্টার শিগগিরই দেশে আনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এছাড়া সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনসের তিনটি (দুটি আর-৪৪, একটি আর-৬৬), স্কয়ার এয়ার লিমিটেড, চট্টগ্রামের পিএইচপি গ্রুপ, বাংলা ইন্টারন্যাশনাল, বিআরবি ক্যাবল, মেঘনা গ্রুপ ও ম্যাবস এয়ার সাপোর্ট বাংলাদেশের একটি করে এবং ইয়াং ওয়াং এয়ারলাইনসের দুটি হেলিকপ্টার রয়েছে।
কোম্পানিগুলো আরো হেলিকপ্টার আনার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপও হেলিকপ্টার ব্যবসার জন্য বেবিচকের কাছে আবেদন করেছে।