আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভরত-পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ চলছে দশকের পর দশক ধরে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিরোধ এখন মনে হয় সূদুর পরাহত, সিরিয়ায় বোমা বর্ষণ চলছে তো চলছেই।
দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিরোধ দগদগে ঘা হয়ে আছে। সবমিলে পৃথিবী এখন এগিয়ে চলছে একটা হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের বিরোধপূর্ণ কমপক্ষে দশটি দেশ যে কোনো সময় ভয়াবহ যুদ্ধের সূচনা করতে পারে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকেও হার মানাতে পারে।
সম্প্রতি ইউক্রেন ও সিরিয়া সংকট নিয়ে রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার নিয়েছে। এতে ইন্ধন যোগাচ্ছে ছোট ছোট সশস্ত্র আঞ্চলিক গ্রুপগুলো। আর ন্যাটোর সঙ্গে তো যুক্তরাষ্ট্র আছেই।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, আর কিছুদিনের মধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যদি লেগেই যায় তাহলে রাশিয়াই হবে এর মূল কুশীলব।
দক্ষিণ চীন সগর নিয়ে চীনের বার বার দাবি এবং যুদ্ধংদেহী কথাবার্তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে। এছাড়া বেইজিং-এর সম্প্রসারণবাদী নীতির ফলে দেশটির সঙ্গে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া সরাসরি যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে।
এছাড়া প্রতিবেশি দেশ তাইওয়ানের সঙ্গে বিরোধও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
সৈন্যের সংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম দেশ যুক্তরাষ্ট্র গত ২০ বছরে আলাদা আলাদভাবে নয়টি সংষর্ষে লিপ্ত হয়।
ওবামা প্রসাশনের অধীনে বিদেশে মোতায়েন আমেরিকান সৈন্য সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
ইদানিং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না ওয়াশিংটন। তারপরও ওয়াশিংটনকে নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কিন্তু কমছে না। বরং কিছুটা বেড়েছে।
অতিসম্প্রতি আমেরিকার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক কিছুটা ভালো হয়েছে। পারমাণবিক কর্মসুচি পরিদর্শনে ইরান সই করায় দেশটির ওপর আরোপিত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায় দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা ভাল হয়।
অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা সত্ত্বেও দেশটির অতীত ইতিহাস কিন্তু খুব একটা সুবিধার নয়। তাই যেকোনো সময় দেশটি প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তাই মধ্যপাচ্যে একটি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে ইরানকে।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এরই মধ্যে ন্যাটো ও রাশিয়াকে টেনে এনেছে বিরোধের কেন্দ্র বিন্দুতে। ন্যাটোর সঙ্গে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো। আর রাশিয়ার লেজ ধরে এসেছে মিত্র দেশগুলো। তবে রাশিয়ার মিত্র দেশগুলোকে এখনো চেনা যাচ্ছে না। অর্থাৎ মুখোস খুলে ফেলেনি দেশগুলো।
তুরস্ক ও ইরানের মধ্যেও যথেষ্ট উত্তেজনা রয়েছে। গত নভেম্বরে রাশিয়ার একটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করে তূর্কি গোলন্দাজ বাহিনী। এতে দেশ দুটির মধ্য উত্তেজনা দেখা দেয় ও বাকযুদ্ধেও জড়িয়ে পড়ে দেশদুটি। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গিকার করেন। ফলে আঙ্কারা ও রাশিয়া মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায়।
ভারত ও পাকিস্তানের দিকে চোখ ফেরানো যাক। সৃষ্টি থেকেই লিপ্ত রয়েছে দেশ দুটি ভূখন্ড গত বিরোধে। ১৯৯৯ সালে লাহোর ঘোষণার পর থেকে দেশ দুটি বেশ শান্ত সময় পার করছে। তারপরও কিছুদিন আগে পুঞ্চে ভারতীয় একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশদুটোর মধ্যে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়।
উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়েও বিরোধ চলছে বহুদিন আগে থেকে।