নিজস্ব প্রতিবেদক : চারদিক থেকে নানামুখী চাপের মুখে খোলস ও ভোল পাল্টাচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামী। এরই মধ্যে দলের শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং দলটির নতুন আমির শপথ নেওয়ার পরপরই এক বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। জামায়াতের গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা যোগ হতে যাচ্ছে বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে। জামায়াতের এসব পরিবর্তনকে সন্দেহের চোখে দেখছেন রাজনীতি-বিশ্লেষক ও বিশিষ্টজনরা। তাঁদের মতে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জামায়াতের শ্রদ্ধা জানানো কোনো আদর্শিক অবস্থান নয়; এটি তাদের অস্তিত্ব রক্ষার রাজনৈতিক কৌশল। গত দুই বছরে দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘটনাকেও একই দৃষ্টিতে দেখছেন তাঁরা।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ফাঁসির দণ্ড হওয়া, নাশকতার মামলায় সব স্তরের নেতাদের ধরপাকড়ে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দলটি। তার ওপর উচ্চ আদালতের রায়ে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে। এ ছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচারের দাবিও রয়েছে দেশবাসীর। এমন নাজুক অবস্থায় অপেক্ষাকৃত তরুণদের দলটির নেতৃত্বে এনে নতুন করে রাজনীতির মাঠে নামার ছক কষছেন জামায়াতের নীতিনির্ধারকরা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, এর ফলে জামায়াতের বিরুদ্ধে ওঠা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ অনেকটাই ম্লান হয়ে যাবে। একই সঙ্গে তরুণদের নেতৃত্বে উজ্জীবিত হবে দলটি। এ ছক নিয়ে গোপনে আলোচনা ও নানা হিসাব-নিকাশ চলছে বলে দলের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। যদিও নতুন আমির শপথ নেওয়ার কয়েক দিনের মাথায়ই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ অনুসন্ধানের কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের মূল আদর্শ মওদুদীবাদ। সেই আদর্শে অবিচল থেকে দলের গঠনতন্ত্রে শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানানোর বিষয়টি তাদের চতুরতার প্রকাশ। এটা জামায়াতের বর্তমান প্রতিকূল অবস্থা কাটিয়ে ওঠা এবং মুক্তিযুদ্ধপ্রেমী নতুন প্রজন্মকে ধোঁকা দেওয়ার কৌশল। আদর্শ অক্ষুণ্ন রেখে তারা কেবল রং বদল করছে সুবিধা নেওয়ার জন্য।
জানা যায়, জামায়াতের অন্তত পাঁচ হাজার নেতাকর্মী এ বছরই মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইতিহাস থেকে অভিজ্ঞতা নেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের পরও অস্তিত্ব রক্ষায় জামায়াতের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলে অনুপ্রবেশ করার কৌশল নিয়েছিল। তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের সংকটময় সময়ে নিজেদের প্রকৃত ঠিকানায় ফিরে যায়। এখনো কোনো আদর্শিক কারণে নয়, নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্যই আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এসব যোগদান ট্রয় যুদ্ধে কাঠের ঘোড়ার পেটে লুকিয়ে ট্রয় নগরীতে শত্রুদের প্রবেশ করার মতো। তারা সুযোগ বুঝে নগরী ধ্বংসের জন্য দরজা খুলে দেবে।
রাজনীতি-বিশ্লেষক ও ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। জামায়াত যদি তাদের গঠনতন্ত্র পুরোটা আওয়ামী লীগের মতোও করে তবুও তারা জামায়াতই থাকবে। গত ৪০-৫০ বছরের অভিজ্ঞতা তাই বলে। তারা মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চায়নি। তারা মওদুদীবাদ ও শরিয়া আইন বাস্তবায়নের পথ থেকে সরে যায়নি। ফলে তাদের বহিরাঙ্গে কী পরিবর্তন এলো তা মুখ্য নয়।’
জামায়াতের নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে যোগদান প্রসঙ্গে মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, জামায়াত-বিএনপির একটা বড় অংশ আওয়ামী লীগে ঢুকে যায়। এরা দলে ঢুকে পুরনো নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়। এতে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উচিত হবে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা।’
সুশাসনের জন্য নাগরিক—সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এ দেশে রাজনীতি করতে হলে মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করেই করতে হবে—এটাই বাস্তবতা। কিন্তু এখন জামায়াত যা করছে তা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য করছে। আওয়ামী লীগে যারা যোগ দিচ্ছে তারা নিজেদের বাঁচাতে যোগ দিচ্ছে। তেলে জলে যেমন মেশানো যায় না, জামায়াত আর আওয়ামী লীগও তাই। যারা সত্যিকারের আওয়ামী লীগ কিংবা জামায়াত তারা এক হতে পারবে না। এখন জামায়াত যা করছে নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্যই করছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি জামায়াতীকরণ হয়ে যায় তবে তা আশঙ্কার হবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও রাজনীতিক-বিশ্লেষক এম এম শওকত আলী বলেন, ‘জামায়াত যদি পুরনো গঠনতন্ত্র ধরে রাখে তাহলে তারা নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ফিরে পাবে না। আবার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ সামনে আসার পর বিভিন্ন মহল থেকে দলটি নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দলটির অনেক শীর্ষ নেতার এরই মধ্যে সাজা হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় রাজনীতি করতে চাইলে জামায়াতকে নতুন আঙ্গিকেই করতে হবে। এ কারণেই হয়তো তাদের অবস্থান পরিবর্তন হচ্ছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘জামায়াত বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একটি কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে নয়, এটা তারা বুঝতে পেরেছে। এখন তাদের দরকার টিকে থাকা, জানে বাঁচা। এ ক্ষেত্রে তাদের অতীত অভিজ্ঞতা এখন কৌশল গ্রহণে সাহায্য করছে। তারা ১৯৭১-এ পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু যুদ্ধের একপর্যায়ে যখন বুঝতে পেরেছে পরিস্থিতি সুবিধার নয়, তখন গা ঢাকা দিয়েছে। অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছে। পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামের অনেক নেতাকর্মীর প্রাণ গেছে। কিন্তু জামায়াতের নেতাকর্মীরা তেমন কেউ মারা যায়নি। ওরা সব সময়ই পরিস্থিতি বুঝে কৌশল নেয়।’
জামায়াতের নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে যোগদান প্রসঙ্গে ড. কলিমুল্লাহ বলেন, ‘এটা অনেকটা বিখ্যাত ট্রয় যুদ্ধে কাঠের ঘোড়ার পেটে লুকিয়ে ট্রয় নগরীতে প্রবেশের মতো। সবাই যখন ঘুমিয়ে তখন নগরীর দরজা খুলে দিয়েছিল ঘোড়ার পেটে লুকিয়ে থাকা সেনারা। এরপর হামলাকারীরা ট্রয় নগরী ধ্বংস করেছিল। এই কৌশল জামায়াতও প্রয়োগের চেষ্টা করছে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা যে দলেই যাক না কেন তাদের উদ্দেশ্যই পূরণ করবে।’
গত ১৭ অক্টোবর রাজধানীর একটি মিলনায়তনে শপথ নেওয়ার পর দেওয়া বক্তব্যে জামায়াতের নবনির্বাচিত আমির মকবুল আহমাদ বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব সাধারণ মানুষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অকৃত্রিম ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি, তাঁদের কথা আজ গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। বিশেষভাবে স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতাদের আমি সশ্রদ্ধ স্মরণ করছি।’
দলীয় সূত্রে জানা যায়, জামায়াতের গঠনতন্ত্র সংশোধন করার লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, ‘আমরা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, বাংলাদেশের জনগণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করিয়াছে। …উপরোক্ত বিশ্বাস ও ঘোষণার ভিত্তিতে শোষণমুক্ত ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের মহান উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এই গঠনতন্ত্র প্রণীত ও প্রবর্তিত হইল।’
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনে দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সতর্ক হতে পরামর্শ দিয়েছেন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এর আগে বিভিন্ন সময়ে জামায়াতের নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে ভেড়ানোর বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান একাধিকবার তুলে ধরেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছর নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট লোকবল আছে, লোক সমর্থন আছে। ওই বিএনপি-জামায়াতের লোক, এরা যদি ভালো হয়ে যায় মনে করেন, তার পরও তাদের যেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কোথাও গ্রহণ করা না হয়। কারণ এরা যে সমস্ত অপরাধ করেছে, এরা মানুষের জাত না। অনেক সময় অনেকে গ্রুপিংয়ে দল ভারি করার জন্য নিয়ে নেয়। আমি সব সময় এটার বিরুদ্ধে।’
কিন্তু আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের এমন বক্তব্যের পরও দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীদের দলে ভেড়ানো থেমে নেই। ঢাকঢোল পিটিয়ে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়েই জামায়াতের নেতাকর্মীদের বরণ করে নেওয়া চলছে। যাঁরা এসব যোগদানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ।
গত ১ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ জামায়াত-বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতাকে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে বরণ করেন। শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা সোহরাব আলী, জামায়াতের শ্রমিক সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আফরোজ জুলমাত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জামায়াত নেতা আব্দুল্লা-হেল-কাফী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে আওয়ামী লীগে ভেড়ান আব্দুল ওদুদ। এদের মধ্যে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে নাশকতা মামলার একাধিক আসামিও ছিল।
গত ৯ আগস্ট জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু পাঁচবিবি উপজেলার বালিয়াঘাটা ইউনিয়নে জামায়াত-শিবিরের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আওয়ামী লীগে নেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাটে জামায়াত-বিএনপির দুই হাজার নেতাকর্মী এক অনুষ্ঠানে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভা মেয়র আব্দুল মজিদ মাস্টারের হাত থেকে ফুল নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। জানা গেছে, চলতি বছর বিভিন্ন সময়ে রাজশাহী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে জামায়াতের বহু নেতাকর্মী যোগ দেন আওয়ামী লীগে।
জামায়াতের নেতাকর্মীদের দলে ভেড়ানোর কারণে আওয়ামী লীগের কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘দলের কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাইলে তা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নিতে হয়। অনেক সময় অনেক কথা শোনা যায় কিন্তু বাস্তবে তার প্রমাণ পাওয়া যায় না। কোথাও কেউ যোগদান করলে তার প্রমাণসহ কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ আসতে হবে। তখন আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারব।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জামায়াত নেতাদের যোগদান অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ বলেন, “তারা (বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী) এখন ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিচ্ছে, এটা আমাদের কৃতিত্ব। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে যদি তারা সংশোধন হয় তাহলে ক্ষতি কী?” আওয়ামী লীগে যোগদানের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সোহরাব আলী বলেন, ‘আমরা চাই দেশের উন্নয়ন হোক। জামায়াতে থেকে এখন দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ আর সম্ভব নয় বলে আমার মনে হয়েছে। এ কারণে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি।’
তবে সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ ও জামায়াত নেতা সোহরাব আলীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘যারা যোগদান করেছে তারা কেউই মনেপ্রাণে আওয়ামী লীগ ও এর নীতি-আদর্শে বিশ্বাস করে না। যারা যোগদান করাচ্ছে এরা ব্যক্তিস্বার্থ ও ব্যক্তি উদ্দেশ্য পূরণের জন্যই করছে। এতে দলের ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ হবে না।’
রাজশাহীর কাকনহাট পৌর এলাকায় জামায়াতের নেতাকর্মীদের দলে নেওয়ার প্রসঙ্গে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, ‘কাকনহাট পৌরসভার যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তা আওয়ামী লীগের অবদান। এই উন্নয়নে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিএনপি-জামায়াতের দুই হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে।’