রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বহুল আলোচিত এস কে সিনহা অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো। এখন ২২তম প্রধান বিচারপতি কে হচ্ছেন, সেটা নিয়েই এখন সবার আগ্রহ।
আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, আপাতত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাই দায়িত্বে থাকছেন। পূর্ণাঙ্গ প্রধান বিচারপতি নিয়োগে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আরেকজন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত বর্তমানে যিনি দায়িত্বে আছেন, তিনিই থাকবেন। সেটা এক বছর হলেও উনিই দায়িত্বে থাকবেন।
আইনমন্ত্রীর এক বছর-সংক্রান্ত ব্যাখ্যার সঙ্গে ভিন্নমত দিয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। তিনি গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদে যে ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির’ কথা বলা আছে, তার অভাব প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হওয়ার পরে সাময়িকভাবে দায়িত্ব পালনরত জ্যেষ্ঠতম বিচারক দীর্ঘমেয়াদে পূরণ করতে পারেন না। প্রধান বিচারপতির যেখানে নিজের শপথ নেই, তিনি কী করে অন্য বিচারকদের শপথ দেবেন?
তাঁর কথায়, রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন এবং সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শপথবাক্যও পাঠ করান। এরপর সেই প্রধান বিচারপতির পরামর্শে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ দেন। প্রধান বিচারপতি তাঁদের শপথও পড়ান।
কবে নিয়োগ পাবেন প্রধান বিচারপতি, সে বিষয়ে নিশ্চিত আভাস দিতে পারেননি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও। তিনি বলেছেন, এটা একান্তভাবেই রাষ্ট্রপতির ওপর নির্ভরশীল। কত দিনের মধ্যে নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হবে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে সংবিধানে নির্দিষ্ট করা কিছু নেই।’
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ব্যাপক আলোচনার পর এক মাসের বেশি ছুটি নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর বিদেশে যান বিচারপতি এস কে সিনহা। ছুটি শেষে ৯ নভেম্বর কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্রটি জমা দেন তিনি। পরের দিন ১০ নভেম্বর পদত্যাগপত্রটি বঙ্গভবনে এসে পৌঁছায়।