টান টান উত্তেজনা? ছিল। ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দুশ্চিন্তা—সেটাও ছিল। লো স্কোরিং টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সবটুকু বিনোদনই হাজির হয়েছিল আজ মিরপুরে। অদ্ভুত সব ঘটনাকে সাক্ষী করে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
জয়ের জন্য ৮ ওভারে দরকার ৫৪ রান। উইকেটে ডোয়াইন ব্রাভো ও শোয়েব মালিক। এরপর নামবেন জস বাটলার। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান তো রয়েছেনই। এমন ম্যাচে হেসেখেলেই জেতার কথা কুমিল্লার। কিন্তু সুনীল নারাইনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে একটু উত্তেজনা আনলেন ব্রাভো। মালিক ও বাটলারের ‘ধীর-স্থির’ ব্যাটও অবদান রাখল কিছুটা। মোহাম্মদ আমিরকে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড বাটলার। ১১ বলে কোনো বাউন্ডারি নেই বাটলারের—ভাবা যায়!
সাইফউদ্দিন নামলেন, চার মারলেন, আউট হলেন! হঠাৎ করেই বিপাকে কুমিল্লা। ২০ বলে ২৬ রান দরকার, হাতে ৪ উইকেট। ম্যাচের চিত্র অনুযায়ী এটাকেই অনেক কঠিন মনে হচ্ছিল। কিন্তু অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকা মালিকই দায়িত্ব বুঝে নিলেন। অপরাজিত এক ফিফটিতে ম্যাচ যখন শেষ করে এলেন, তখনো ২ বল বাকি। এ ম্যাচ শেষ বলে না গড়ানোটা যেন মানাচ্ছে না। এমন নাটকীয়তার ম্যাচ শেষ বলেই মীমাংসা হওয়া দরকার ছিল।
কেমন ‘নাটকীয়তা’, একটু খুলে বলা যাক। টসে জিতে ব্যাটিং নিলেন সাকিব আল হাসান। এবারের বিপিএলে এ কাজ শেষ কবে কে করেছেন মনে করা যাচ্ছে না। ফর্মের চূড়ান্তে থাকা শহীদ আফ্রিদিকে বসিয়েই রাখাই হলো। এর মধ্যে হাসান আলী দ্বিতীয় ওভারে দুই উইকেট ফেলে দিলেন। তারপরও ১৩ ওভারের মধ্যেই ১০০ পেরিয়ে গেল ঢাকা। এর কারণ সুনীল নারাইন। তিনি ৪৫ বলে ৭৬ রানের এক ঝড় তুলেছিলেন। তাঁর সঙ্গী কুমার সাঙ্গাকারা। তবে সাঙ্গাকারার ইনিংসকে ঝড়টড় উপাধি দেওয়া যাচ্ছে না। ৩০ বলে ২৮ রান করে সাঙ্গা আউট হতেই ঝামেলার শুরু।
১৩তম ওভারে ২ উইকেটে ১০৪ রান করা দলটিই কিনা ১৯তম ওভারের মধ্যেই অলআউট! ১৪ রানে শেষ ৭ উইকেট পড়েছে ঢাকার। দলের অন্য কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ব্যাটসম্যানদের নাম শুনতে চান? এভিন লুইস, মেহেদী মারুফ, পোলার্ড, সাকিব, মোসাদ্দেক, জহুরুল! এরই ফাঁকে এবারের বিপিএলে প্রথম পাঁচ উইকেটের দেখা মিলল। ২০ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন পাকিস্তানের হাসান আলী। সবাইকে বোল্ড করেছেন এই পেসার!
অন্য কোনো ম্যাচ হলে এটাই আলোচনার কেন্দ্রে থাকত, কিন্তু এমন অদ্ভুত ম্যাচে এটা কেবলই একটি পাদটীকা!